বই নোট ( ইসলামী সাহিত্য)

সংবিধান
বাংলাদশ ইসলামী ছাত্রশিবির

সংজ্ঞাঃ
     কোন সংস্থা কি নিয়মে চলবে, তার সমস্ত বিভাগ কিভাবে পরিচালিত হবে ত্রসব বিষয় যেখানে লিপিবদ্ধ থাকে তাকে সংবিধান বলে।
গুরুত্বঃ
ক) চিন্তাকে কেন্দ্রীভূত করে
খ) চিন্তাকারীকে ত্রকদিকে প্রভাবিত করে
গ) দায়িত্ব পালনে সমন্বয় সাধন করে
ঘ) নেতৃত্ব ও কর্মীবাহিনীর সমন্বয় সাধন করে
ঙ) ইতিহাস সংরক্ষন করে
চ) নৈতিক মূল্যবাধের সমন্বয় সাধন করে।

উত্তম সংবিধানের বৈশিষ্ট্যঃ
         ক) সুস্পষ্ট
খ) নমনীয়তা
গ) মোটামুটি সংক্ষিপ্ত
ঘ) নাগরিক অধিকার লিপিবদ্ধ থাকবে।
আমাদের সংবিধানের বৈশিষ্ট্যঃ
১.সংক্ষিপ্ত অথচ ব্যাপক
২. কোরআন, সুন্নাহ ও ইসলামী আন্দোলনের ঐতিহ্যের আলোকে রচিত
৩. সুপরিবর্তনীও নয় বা দুষ্পরিবর্তনীয়ও নয়
৪. বাক্য কেন্দ্রিক নয়, শব্দ কেন্দ্রিক
৫. লিখিত ও অলিখিতের সমন্বয়।

সংবিধানের প্রয়োজনীয়তা:
১. জনশক্তিকে একটি সাধারন লক্ষ্য উদ্দেশ্যের দিকে পরিচালিত করার জন্য।
২. নেতাদের দায়িত্ব কর্তব্য এবং জবাবদিহিতা নির্নয় করা।
৩. কর্মীদের দায়িত্ব কর্তব্য এবং জবাবদিহিতা নির্নয় করা।
৪. নেতা ও কর্মীদের মধ্যে ক্ষমতা ও দায়িত্ব নির্দিষ্ট করা।
৫. সাংগঠনিক কার্যক্রমগুলো সূষ্ঠুভাবে পরিচালনা করার জন্য।

সংবিধানের উৎসঃ
      ১) আল কোরআন ২) আল হাদীস ৩) ইসলামী আন্দোলনের ঐতিহ্য।
সংবিধানের উপাদানঃ
ক) ভূমিকা খ) ধারা-৫০টি গ) পরিশেষ

সংবিধানের সংক্ষিপ্ত ইতিহাস:
      সকল ইতিহাসের একটি ইতিহাস রয়েছে। তেমনি বাংলাদেশ ইসলামি ছাত্রশিবিরের ও একটি ইতিহাস রয়েছে। ১৯৪৭ সালে পাকিস্তান আমলে ইসলামী জমিয়তে পালা বা পাকিস্তান নামে একটি ইসলামী সংঘঠন ছিল। ১৯৪১-১৯৪৭ সালে এ উপমহাদেশে কোন ছাত্র সংঘঠন ছিল না। তখন কমিউনিষ্ট সংঘঠন বেশি জনপ্রিয় ছিল। তারা উপমহাদেশে শ্রমিক, মজুর ও ছাত্রদের অস্ত্রের ও নাস্তিকের দিকে নিয়ে যায়। ১৯৫২ সালে এ সংগঠনের সভাপতি খুররম জাহ মুরাদ খসড়া সংবিধান তৈরি করেন। ১৯৫৬ সালে হোসেন আহমদ নামে একজন পাকিস্তানি ব্যক্তি ছাত্র ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়ে সংগঠনের কাজ শুরু করে এবং নতুন খসড়া সংবিধানের মাধ্যমে। ১৯৭১ সালের ১৬ ই ডিসেম্বরের পর এ সংগঠনের কাজ আরো জোরদারভাবে চলতে থাকে। ১৯৭৩ সালে কুমিল্লায় গনতন্ত্রের একটি কমিটি গঠন করেন। মীর কাশেম আলী, আ. ন. ম. মুজাহিদ, এ কে এম নজির আহমদ এবং আরো অন্যান্য ব্যক্তিদের নিয়ে একটি কমিটি গঠন করেন। ১৯৭৬ সালের ১৬ ই ডিসেম্বর নাজির বাজার কমিউনিটি সেন্টারে বাংলাদেশের সকল সদস্যদের নিয়ে সদস্য সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। এ সম্মেলনে সংবিধান প্রতিষ্ঠিত হয় বা মূল সংবিধান রচিত হয়।

এ বইটি চারটি অংশে বিভক্তঃ
          ক) পূর্বকথা খ) ভূমিকা গ) ধারা বর্নণা ঘ) পরিশেষ
পূর্বকথাঃ
যে কোন প্রতিষ্ঠানের সংবিধানই মৌলিক দলিল হিসেবে বিবেচিত হয়। সংগঠন পরিচালনা, শৃংখলা বিধান ও নীতিমালা সংরক্ষনে এর প্রয়োজনীয়তা অনস্বীকার্য। বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের কর্মপদ্ধতি ত্রক পবিত্র আমানত। ত্রর প্রতিটি দিক কুরআন, সুন্নাহ ও ইসলামী আন্দোলনের ঐতিহ্যের আলোকে প্রণয়ন করা হয়েছে। তাই বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের সকল কর্মতৎপরতা নীতিমালাকে অক্ষুন্ন রেখে পরিবেশ ও পরিস্থিতির দাবী অনুসারে ত্রই সংবিধানে বিভিন্ন সময় কিছু কিছু সংশোধনী আনা হয়েছে। সংবিধানের বর্তমান এ সমন্বিত সংস্করন সর্বশেষ সংশোধনীসহ প্রকাশিত হল। আল্লাহ তাআলা আমাদের সংবিধানের আলোকে সংগঠনের যাবতীয় কাজ আঞ্জাম দেয়ার তৈফিক দিন। আমীন।
ভূমিকাঃ
     এ অংশটি দুইটি অংশে বিভক্ত। যথা- বিশ্বাস, সিদ্বান্ত।
*
বিশ্বাসঃ
তাওহীদ
নিখিল বিশ্বের সৃষ্টি, এর স্থিতি, স্থায়িত্ব, সংরক্ষন, ক্রমবিকাশ, এবং ক্রমোন্নতি একমাত্র সেই আল্লাহর দান, যিনি অসীম জ্ঞান ও বিচক্ষনতার অধিকারী । যার ইচ্ছা ও আদেশ নিরংকুশভাবে আসমান ও জমিনের প্রতিটি অনুপরমানুর মধ্যে সক্রিয় রয়েছে, যার হাতে রয়েছে জীবিকার চাবিকাঠি ও জীবন-মৃতু্যর বাগডোর এবং যিনি সমস্ত শক্তি ও ক্ষমতার উৎস।
আখেরাত
পৃথিবীর জীবনই মানব-জীবনের শেষ নয়, মৃতু্যর পর মানুষকে আখেরাতের অনন্ত জীবনে প্রবেশ করতে হবে। মহাপরাক্রান্ত আল্লাহর সামনে তার পার্থিব জীবনের প্রতিটি মুহুত্ব ও কাজের হিসেব দিতে হবে। পার্থিব জীবনে কেবলমাত্র আল্লাহ প্রদত্ত বিধান অনুযায়ী গোটা জীবন পরিচালিত করলেই আখেরাতের সাফল্য ও কৃতকার্যতা অর্জিত হতে পারে।
রিসালাত
আল্লাহ যুগে যুগে মানব জাতির পথ নির্দেশের জন্য নির্ভুল জ্ঞান নবী ও রাসূলদের এ দুনিয়ায় প্রেরন করেছেন। আল্লাহ প্রদত্ত রাসূল(সা:) প্রদর্শিত জীবন বিধানই মানব জাতির সিরাতুল মুসতাকিম সহজ ও নির্ভুল চলার পথ। বিশ্ব নবী মুহাম্মদ (সা:) সর্বশেষ নবী। তার আনীত আল-কুরআন এবং উপস্থাপিত জীবনাদর্শই গোটা মানব জাতিকে কিয়ামত পর্যন্ত সঠিক পথের সন্ধান দিবে;এবং
খেলাফাত
ইসলামের বিধানগুলোকে পূর্নভাবে গ্রহন করে নেয়ার মধ্যেই নিহিত রয়েছে মানব মুক্তি ও কল্যান। যখনই কৃষ্টি-সভ্যতা এবং সমাজব্যবস্থাকে ইসলামের মূলনীতি থেকে অপসারিত করে প্রতিষ্ঠিত করা হয়েছে, তখনই মানবতাকে অকল্যান ও ধ্বংসের দিকে ঠেলে দেয়া হয়েছে। ইসলামী জীবন বিধানের প্রতি উৎকর্ষতাই বর্তমান জগতের সমস্ত অশান্তির মূল কারণ এবং ইসলামী জীবনবিধানের অনুসরনই এই শোষনীয় অবস্থা দূর করার একমাত্র উপায়।
সিদ্বান্তঃ
আনুগত্য
আল্লাহর আনুগত্য এবং রাসূল (সা:)-এর অনুসরনই আমাদের জীবনের একমাত্র উদ্দেশ্য হবে। আমরা সকল প্রকার আনুগত্য ও দাসত্ব পরিত্যাগ করে একমাত্র আল্লাহর আনুগত্য ও দাসত্ব অবলম্বন করব। সর্ব প্রকার মত, পথ ও বিধান ত্যাগ করে একমাত্র রাসূল(স:) এর আদর্শ জীবন ও পদাংক অনুসরন করব। আমাদের এ আনুগত্য ও অনুসরন জীবনের কোন একটি বিভাগের জন্য হবে না, বরং জীবনের প্রতিটি দিক ও বিভাগে পরিব্যাপ্ত হবে।
দাওয়াত
আমরা আমাদের জীবনকে ইসলামের আলোকে উদ্ভাসিত করে তুলব এবং মানবসমাজকে আল্লাহর আনুগত্য ও রাসূল (সা:) এর অনুসরণের দিকে ডাকব। আমাদের সংগ্রাম-সার্বিক প্রচেষ্টা-একমাত্র এ উদ্দেশ্যেই নিয়োজিত থাকবে, যেন পৃথিবীর বুকে আল্লাহর বাণী সর্বোচ্চ মর্যাদা লাভ করে, রাসূল (সা:)-এর প্রদর্শিত বিধান পৃথিবীর বুকে সঠিক অর্থে প্রতিষ্ঠিত হয় এবং মানব জাতি ইসলামের ভিত্তিতে তাদের সামগ্রিক জীবন গড়ে তুলতে সহজ হয়। এবং
বিপ্লব
বিশ্বব্যাপী ইসলামী বিপ্লবের পদক্ষেপ হিসেবে আমরা সর্বপ্রথম বাংলাদেশে ইসলামী আদর্শ বাস্তবায়নের জন্য আমাদের সমস্ত শক্তি ও সামর্থ্য নিয়োজিত করব।
ধারাসমূহ
* ধারা-১ : ত্রই সংগঠনের নাম বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির
*
ধারা-২ : লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য_আল্লাহ প্রদত্ত রাসূল (সা:) ত্রর প্রদর্শিত বিধান অনুযায়ী মানুষের সার্বিক জীবনের পুণবিন্যাস সাধন করে আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন।
*
ধারা-৩ : ত্রই সংগঠনের ৫ দফা কর্মসূচি।
দাওয়াতঃ
     তরুন ছাত্র সমাজের কাছে ইসলামের আহবান পৌছে দিয়ে তাদের মাঝে ইসলামী জ্ঞান অর্জন ত্রবং বাস্তব জীবনে ইসলামের পূর্ণ অনুশীলনের দায়িত্বানুভূতি জাগ্রত করা।
সংগঠনঃ
যে সব ছাত্র ইসলামী জীবন বিধান প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে অংশ নিতে প্রস্তুত তাদেরকে সংগঠনের অধীনে সংগবদ্ধ করা।
প্রশিক্ষনঃ
ত্রই সংগঠনের অধীনে সংঘবদ্ধ ছাত্রদেরকে ইসলামী জ্ঞান প্রদান ত্রবং আদর্শ চরিবানরুপে গড়ে তুলে জাহেলিয়াতের সমস্ত চ্যালেঞ্জ্যের মোকাবিলায় ইসলামের শ্রেষ্ঠত্ব প্রমান করার যোগ্যতাসম্পূর্ণ কর্মী হিসেবে গড়ার কার্যকরী ব্যবস্থা করা।
ইসলামী শিক্ষা আন্দোলন ও ছাত্রসমাজঃ
আদর্শ নাগরিক তৈরীর উদ্দেশ্যে ইসলামী মূল্যবাধের ভিত্তিতে শিক্ষা ব্যবস্থার পরিবর্তন সাধনের দাবীতে সংগ্রাম ত্রবং ছাত্র সমাজের প্রকৃত সমস্যা সমাধানের সংগ্রাম নেতৃত্ব প্রদান।
ইসলামী সমাজ বিনির্মানঃ
অর্থনৈতিক শোষন, রাজনৈতিক নিপীড়ন ত্রবং সাংস্কৃতিক গোলামী হতে মনবতার মুক্তির জন্য ইসলামী বিপ্লব সাধনে সর্বাত্বক প্রচেষ্টা চালানো।
সদস্য
*
ধারা-৪ :
একজন শিক্ষার্থী যদি সংগঠনের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্যকে তার জীবনের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য হিসেবে গ্রহন করেন, এ সংগঠনের কর্মসূচী কর্মপদ্ধতির সাথে পূর্ণ ঐক্যমত পোষন করেন ও তা বাস্তবায়নের প্রচেষ্টায় সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহন করেন, এ সংগঠনের সংবিধানকে সম্পূর্ণরুপে মেনে চলেন, তার জীবনে ইসলাম নির্ধারিত ফরজ ও ওয়াজিবসমূহ যথাযথভাবে পালন করেন, কবীরাগুনাহ সমূহ থেকে দূরে থাকেন এবং সংগঠনের লক্ষ্য ও কর্মসূচীর বিপরীত কোন সংস্থার সঙ্গে কোন সম্পর্ক না রাখেন, তাহলে তিনি এই সংগঠনের সদস্যপদ লাভ করতে পারেন।
*
ধারা-৫ :
সদস্যপদ লাভে ইচ্ছুক কোন কর্মী কেন্দ্রিয় সভাপতি হতে নির্ধারিত ফরম সংগ্রহ করে তা যথাযথভাবে পূরন করত: কার্যকরী পরিষদ কর্তৃক  অনুমোদিত পন্থায় কেন্দ্রিয় সভাপতির কাছে পাঠিয়ে দেবেন এবং কেন্দ্রিয় সভাপতি তা মঞ্জুর করবেন এবং তার সদস্য পদের শপথ নেয়ার ব্যবস্থা করবেন। মঞ্জুর না করলে তার কারণ কার্যকরী পরিষদের নিকট ব্যাখ্যা করতে বাধ্য থাকবেন।
*
ধারা-৬ :
কোন সদস্য যদি সংবিধানের ৪ নং ধারায় বর্নিত বিষয়সমূহ আংশিক বা পূর্ণভাবে লঙ্গন করেন অথবা সদস্য হওয়াকালীন প্রদত্ত প্রতিশু্রতি ভঙ্গ করেন অথবা সংগঠনের প্রতি অবজ্ঞা প্রদর্শন করেন অথবা তাকে সংশোধনের প্রচেষ্টা সত্তেও দীর্ঘদিন পর্যনত্ম সংগঠনের কাজে অবহেলা কওে চলেন, তাহলে কার্যকরী পরিষদ কর্তৃক গৃহিত নির্ধারিত পন্থায় তার সদস্য পদ বাতিল করা হবে।
*
ধারা-৭ :
যদি কোন সদস্য তার সদস্য পদ থেকে ইসত্মফা দিতে চান তাহলে তাকে কেন্দ্রিয় সভাপতির নিকট পদত্যাগপত্র পেশ করতে হবে। কেন্দ্রিয় সভাপতি তার পদত্যাগপত্র পাওয়ার সাথে সাথে তার সদস্যপদ মূলতবী হয়ে যাবে এবং কেন্দ্রিয় সভাপতির অনুমোদনের পর পরই তার সদস্যপদ বাতিল হয়ে যাবে।
সাথী
*
ধারা-৯ :
যদি কোন শিক্ষার্থী এ সংগঠনের লক্ষ্য ও উদ্দশ্যের সাথে ঐক্যমত পোষন করেন ,সংগঠনের কর্মসূচি ও কর্মপদ্ধতির সাথে সচেতনভাবে ত্রকমত হন, ইসলামের প্রাথমিক দায়িত্বসমূহ পালন করেন ত্রবং সংগঠনের সামগ্রিক তৎপরতায় পূর্ণভাবে সহায়তা করতে প্রতিশ্রুতি দেন, তাহলে তিনি এ সংগঠনের সাথী হতে পারেন।
*
ধারা-১০ :
সাথী হতে ইচ্ছুক কোন শিক্ষার্থী কেন্দ্রীয় সংগঠন কতৃক নির্ধারিত সাথী হবার আবেদনপত্র পূরন করে তা কেন্দ্রীয় সভাপতির কাছে জমা দিবেন ত্রবং কেন্দ্রীয় সভাপতি তা মঞ্জুর করে নিবেন।
*
ধারা-১১ :
যদি কোন সাথী সংবিধানের ৯নং ধারায় বর্ণিত নিয়মসমূহ আংশিক বা পূর্ণরুপে লঙ্গন করেন ,তাহলে কেন্দ্রীয় সভাপতি বা তার স্থানীয় প্রতিনিধি উক্ত সাথীর সাথী পদ বাতিল করতে পারেন।
কেন্দ্রীয় সংগঠন
* ধারা-১২ :
কেন্দ্রীয় সংগঠন কেন্দ্রীয় সভাপতি, কার্যকরী পরিষদ ত্রবং ত্রকটি সেক্রেটারিয়েট সমন্বয়ে গঠিত হয়।
*
ধারা-১৩ :
ত্রই সংগঠনের কেন্দ্রীয় সভাপতি সংগঠনের সদস্যদের প্রত্যক্ষ ভোটে ত্রক বছরের জন্য নির্বাচিত হবেন।
*
ধারা-১৬ :
কেন্দ্রীয় সভাপতির দায়িত্ব ও কর্তব্য হচ্ছে, ত্রই সংগঠনের মূল উদ্দেশ্য হাসিল, পরিচালনা, কর্মসূচির বাস্তবায়ন সর্বাকৃষ্ট সাংগঠনিক শৃংখলা প্রতিষ্ঠা ও সংরক্ষন।


**** ধারা-১৯ :
সদস্যদের প্রত্যক্ষ ভোটে প্রতি 140 জনে ত্রকজন হারে অবশিষ্ট সংখ্যার জন্য ত্রকজন নির্বাচিত প্রতিনিধিদের নিয়ে কার্যকরী পরিষদ ত্রক বছরের জন্য গঠিত হবে ত্রবং সভাপতি প্রয়াজনবোধ করলে নির্বাচিত প্রতিনিধিদের ত্রক-তৃতীয়াংশের বেশী হবে না, ত্রমন সংখ্যক সদস্যকে ত্রবং কার্যকরী পরিষদের প্রাক্তন সদস্যদের মধ্যে থেকে অনুর্ধ দুজনকে কার্যকরী পরিষদের পরামর্শক্রমে পরিশষদের অন্তভূক্ত করতে পারবেন। কেন্দ্রীয় সভাপতি কার্যকরী পরিষদের সভাপতি থাকবেন ত্রবং সেক্রেটারী জেনারেল পদাধিকার বলে কার্যকরী পরিষদের সদস্য থাকবেন।
কার্যকরী পরিষদ
* ধারা-২০ : কার্যকরী পরিষদের সদস্যগন কেন্দ্রীয় সভাপতির ব্যবস্থাপনায় শফথ গ্রহন করবেন।
*
ধারা-২১ : কার্যকরী পরিষদের কোন সদস্যদের পদ শূন্য হলে তিন মাসের মধ্যেই তা পূরন করতে হবে।
*
ধারা-২২ :
সামগ্রিকভাবে কার্যকরী পরিষদের ও ব্যক্তিগতভাবে এর সদস্যদের দায়িত্ব হচ্ছে নিজেদের তত্বাবধান, কেন্দ্রিয় সভাপতির তত্বাবধান, সংগঠনে ইসলামী নীতির অনুসৃতির তত্বাবধান, সংগঠনের কর্মসূচী বাস্তবায়নের তত্বাবধান ও পর্যবেক্ষন, সংবিধান অনুসৃতির তত্বাবধান, সংগঠনের যে কোন ক্রটি দূরীকরন, সংগঠনের সামগ্রিক কাজের মৌলিক পরিকল্পনা প্রণয়ন, কেন্দ্রিয় সভাপতিকে পরামর্শদান, নি:সংকোচে মত প্রকাশ এবং কার্যকরী পরিষদের অধিবেশনে নিয়মিত যোগদান অথবা অভিমত প্রেরন।
সেক্রেটারিয়েট
*ধারা-২৭ :
সেক্রেটারী জেনারেলের সেক্রেটারিয়েটের বিভাগগুলোর কাজ সুষ্ঠুভাবে পরিচালনা করার দায়িত্ব থাকবে। অধ:স্তন সংগঠনগুলোর ও কর্মীদের উপর দৃষ্টি রাখা এবং কেন্দ্রিয় সভাপতিকে সমস্ত বিষয়ে ওয়াকিফহাল রাখা তার দায়িত্বের অন্তর্ভুক্ত হবে।
*
ধারা-২৮ :
কেন্দ্রীয় সভাপতির দায়িত্ব ও কর্তব্য পালনে সর্বোতভাবে সহযোগিতা করাই সেক্রেটারিয়েটের দায়িত্ব ও কর্তব্য ত্রবং সেক্রেটারিয়েট কাজের জন্য সভাপতির নিকট দায়ী থাকবেন।
সদস্য শাখা
*
ধারা-৩১ :
কেন্দ্রীয় ব্যবস্থাপনার ভিত্তিতে সংগঠনের কর্মসূচি বাস্তবায়ন ও কেন্দ্রীয় সভাপতির নির্দেশাবলী পালনেই সদস্য শাখার দায়িত্ব ও কর্তব্য।
*****ধারা-৩৪ :
ত্রই সংগঠনের সভাপতি বা কার্যকরী পরিষদের সদস্য বা অন্য যে কোন দায়িত্বশীল ব্যক্তি নির্বাচন করা কালে ব্যক্তির আল্লাহ ও রাসূল (সা:) ত্রর প্রতি আনুগত্য, তাকওয়া, আদর্শের সঠিক জ্ঞানের পরিসর, সাংগঠনিক প্রজ্ঞা, শৃংখলাবিধানের যোগ্যতা, মানষিক ভারসাম্য, উদ্ভাবনী শক্তি, কর্মের দৃড়তা, অনড় মনোবল, আমানতদারী ত্রবং পদের প্রতি লোভহীনতার দিকে অবশ্যই নজর রাখতে হবে।
অর্থব্যবস্থা
*
ধারা-৩৬ :
সংগঠনের প্রত্যেক স্তরে বায়তুলমাল থাকবে। কর্মী ও শুভাকাংখীদের দান, সংগঠন প্রকাশনীর মুনাফা ত্রবং যাকাতই হবে বায়তুলমালের আয়ের উৎস।
*
ধারা-৩৭ : সংশ্লিষ্ট সভাপতি সংগঠনের কর্মসূচির বাস্তবায়ন ও অন্যান্য সাংগঠনিক কাজে বায়তুলমালের অর্থ ব্যয় করেন।
*
ধারা-৩৮ : বায়তুলমালের যাকাত সংগ্রহ করতে হলে পূর্বাহ্নে কেন্দ্রীয় সভাপতির অনুমতি নিতে হবে ত্রবং যাকাত থেকে প্রাপ্ত অর্থের হিসাব পৃথক রাখতে হবে। ত্রই অর্থ কেবলমাত্র শরীয়ত নির্ধারিত খাতে ব্যয় করতে হবে।
*
ধারা-৩৯ : অধ:স্তন সংগঠনগুলো বায়তুলমাল থেকে নিয়মিতভাবে নির্ধারিত অংশ উধর্তন বায়তুলমালে জমা দিবে।
পদচ্যুত
*
ধারা-৪১ : কেন্দ্রীয় সভাপতি যদি স্বেচ্ছায় শরীয়তের স্পষ্ট বিধান লংগন করেন অথবা তার কার্যক্রমে সংগঠনের ক্ষতি হবার আশঙ্কা দেখা দেয় তাহলে তাকে পদচু্যত করা যাবে।
বিবিধ
*
ধারা-৪৯ : জানুয়ারী মাস থেকে এ সংগঠনের সাংগঠনিক বছর শুরু হবে।
*
ধারা-৫০ :
এ সংগঠনের সাথে সংশ্লিষ্ট যেসব ছাত্রের শিক্ষাজীবন সমাপ্ত হয়ে যাবে তাদেরকে নিয়ে এ সংগঠনের ত্রকটি ভ্রাতৃশিবির গঠিত হবে

কর্মপদ্ধতি

বাংলাদশ ইসলামী ছাত্রশিবির


         কর্মপদ্ধতি কাকে বলে?
কর্মকে সফল করার জন্য যে পদ্ধতি বা নীতিমালা প্রনয়ন করা হয় তাকে কর্মপদ্ধতি বলে। মানব রচিত মতবাদকে প্রতিষ্ঠা করার জন্য যে নীতিমালা প্রণয়ন করা হয় তাকে মানব রচিত মতবাদ বলে।
বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের কর্মপদ্ধতি যে সকল নীতিমালা দ্বারা কর্মসূচিগুলো পরিচালনা করা হয় তাকে শিবিরের কর্মপদ্ধতি বলে।
          শিবিরের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্যঃ আল্লাহর এ জমিন থেকে সকল প্রকার জুলুম ও নির্যাতন মূলোচ্ছেদ করে আল কোরআন ও আল হাদীসের আলোকে ভ্রাতৃত্ব ও ন্যায় সৌধের উপর এক ইসলামী সমাজ গড়ে তোলার মহান লক্ষ্যকে সামনে রেখে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে বাংলাদেশ ইসলামী ছাশিবির। চমক লাগানো সাময়িক কোন উদ্দেশ্যে নয়।
          কর্মপদ্ধতির প্রকারভেদঃ
কর্মপদ্ধতিকে তিন ভাগে ভাগ করা যায়।
১. ভূমিকা ২. মূল আলাচনা ৩. পরিশিষ্ট্য
          কর্মপদ্ধতির প্রয়াজনীয়তাঃ
১. শিবিরের কর্মপদ্ধতি ও অন্যান্য কর্মপদ্ধতির পার্থক্য ২. পদ্ধতিগত দিক থেকে পার্থক্য
৩.রাসূল (সা:) এর অনুসৃত পদ্ধতি ৪. যুগে যুগে ইসলামী আন্দালনের ইতিহাস ৫. ইসলামী আন্দালনের কর্মীদের ত্যাগ ও কুরবানী।
           সক্রিয় কর্মীর গুনাবলীঃ ৮ টি
১. মজবুত ঈমান
২. খোদাভীতি
৩. আদর্শের সুস্পষ্ট জ্ঞান
৪. আন্তরিকতা
৫. নিষ্ঠা ৬.কর্মস্পৃহা
৭. চারিত্রিক মাধুর্য্য
৮. কর্মসূচি ও কর্মপদ্বতির যথার্থ অনুধাবন
           কর্মসূচি ও কর্মপদ্ধতি জানার মাধ্যমঃ ৪ টি
১. বার বার অধ্যয়ন
২. চিন্তা গবেষনা ও অধ্যয়ন
৩. কর্মপদ্ধতির সাথে কাজের সম্পর্ক
৪. পুরাতন দায়িত্বশীলদের অভিজ্ঞতা
           কর্মীর বেশিষ্ট্যঃ ৫ টি
১. দাওয়াতী কাজ করা
২. কর্মী সভায় নিয়মিত যোগদান
৩. বায়তুলমাল নিয়মিত এয়ানত দেয়া
৪. ব্যক্তিগত রিপোর্ট রাখা
৫. টেবিল ব্যাংক দেয়া
           শিবিরের কর্মপদ্ধতি ও অন্যান্য কর্মপদ্ধতির মধ্যে পার্থক্যঃ
শিবিরের কর্মপদ্ধতি
১. কর্মপদ্ধতির দর্শন ইসলাম।
২. শিবির চায় ন্যায় ও যুক্তিসঙ্গভাবে ইসলাম প্রতিষ্ঠা।
৩. কর্মপদ্ধতির ভিত্তি কুরআন ও সুন্নাহ ।
৪. সহজ, সরল ও বিজ্ঞানসম্মত কর্মপদ্ধতি।
অন্যান্য কর্মপদ্ধতি
১. কর্মপদ্ধতির দর্শন গাইরে ইসলাম।
২.সন্ত্রাস, শক্তি ও মিথ্যাচার যে কোন মাধ্যমে তাদের আদর্শ প্রতিষ্ঠা।
৩. বাতিলের ভিত্তি মনগড়া মতবাদ।
৪. সঠিক অনুসিত কোন পদ্ধতি পরিলক্ষিত হয় না।
প্রথম দফা কর্মসূচি
           দাওয়াতঃ তরুন ছাত্র সমাজের কাছে ইসলামের আহবান পৌছে দিয়ে তাদের মাঝে ইসলামী জ্ঞান অর্জন এবং বাস্তব জীবনে ইসলামের পূর্ণ অনুশীলনের দায়িত্বানুভূতি জাগ্রত করা।
           দাওয়াতর দিকঃ ৩ টি
১. ইসলামের ব্যাপক প্রচার
২. ছাত্রদের মাঝে ইসলামী জ্ঞান অর্জেনর দায়িত্বানুভূতি
৩. ইসলামী অনুশাসন মেনে চলার দায়িত্বানুভূতি জাগ্রত করা।
           দাওয়াতর কাজঃ ৭ টি
১. ব্যক্তিগত সাক্ষাৎকার ও সমপ্রীতি স্থাপন
২. সাপ্তাহিক ও মাসিক সাধারণ সভা
৩. সিম্পোজিয়াম ও সেমিনার
৪. চা-চক্র ও বনভোজন
৫. নবাগত সংবর্ধনা
৬. বিতর্ক সভা, রচনা, ত্রবং বক্তৃতা প্রতিযাগীতা ও সাধারণ জ্ঞানের আসর
৭. পোষ্টারিং, দেয়াল লিখন, পরিচিতি ও বিভিন্ন সময় প্রকাশিত সাময়িকী বিতরন।
            টার্গেটকৃত ছাত্রের গুনাবলীঃ ৫ টি
১. মেধাবী ছাত্র
২. বুদ্বিমান ছাত্র
৩. চরিত্রবান
৪. নেতৃত্বের গুনাবলী সম্পন্ন
৫. সমাজে বা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে প্রভাবশালী
            ব্যক্তিগত সাক্ষাৎকারের পন্থাসমূহঃ
১.পরিকল্পনাঃ অল্প বা দীর্ঘ সময়, ধৈর্য্য ও আন্তরিকতা, নিয়মিত যোগাযোগ
২.সমপ্রীতি স্থাপনঃ
৩.ক্রমধারা অবলম্বনঃ
    ক) প্রথম সাক্ষাতে মূল দাওয়াত না পৌছানা
    খ) আস্থা ও বিশ্বাস স্থাপন
    গ) যাবতীয় ভুল ধারনার অপনোধন
    ঘ) ইসলামের সুমহান পরিচয় তুলে ধরা
    ঙ) ইসলামী অনুশাসনের প্রতি আকর্ষন সৃষ্টি করা
    চ) সাংগঠনিক জীবনের পরিচয় তুলে  ধরা
    ছ) রাসূল (সা:) ত্রর বিপ্লবী জীবন
    জ) সাহাবায়ে কেরামের সংগ্রামী জীবন
       যোগাযোগকারীর বেশিষ্ট্যঃ
১. কম কথা বলা
২. অত্যধিক ধৈর্য্যের পরিচয় দেয়া
৩. বেশী কথার পরিবর্তে চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য দিয়ে আকর্ষন সৃষ্টি করা
৪. ইসলাম সম্পর্কে সঠিক ও স্পষ্ট ধারনা রাখা
৫. কোন প্রশ্নের জবাব দিতে না পারলে গোজামিলের আশ্রয় না নেয়া
৬. সাক্ষাৎকৃত ব্যক্তির মনমানষিকতার দিকে লক্ষ্য রাখা
৭. যোগাযোগকৃত ব্যক্তির রোগ দূর করার জন্য একজন অভিজ্ঞ চিকিৎসকের ভূমিকা পালন করা
৮. দুর্বলতার সমালোচনা না করা
৯. সৎ গুনাবলী বিকাশে সহযোগিতা করা
১০. ব্যবহারে অমায়িক হওয়া
১১ .সুখে-দু:খে অংশীদার হওয়া
১২. মনকে অহেতুক ধারনা থেকে দূরে রাখা
১৩. সম্পর্ক বৃদ্বির জন্য একসাথে ভ্রমন ও নাস্তা করা, নিজ বাসায় নিয়ে আসা, তার বাসায় যাওয়া ও উপহার সামগ্রী প্রদান।
          ক্রমান্বয়ে কর্মী পর্যায়ে নিয়ে আসাঃ
১. সংগঠনের বিভিন্ন অনুষ্ঠানের প্রতি প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে আকর্ষন সৃষ্টি করা
২. সাধারন সভা, চা-চক্র ও বনভাজনে শামিল হতে হবে
৩. ছাত্রদের জ্ঞান, বুদ্ধি, আন্তরিকতা, মানষিকতা ও ঈমানের দৃঢ়তা লক্ষ্য করে পরিকল্পিতভাবে বই পড়াতে হবে
৪. বিভিন্ন ইবাদতের প্রতি দৃষ্টি আকর্ষন করতে হবে
৫. সময় সময় মনমানষিকতা বুঝে তাকে ছোট ছোট কাজ দিতে হবে।

 দ্বিতীয় দফা কর্মসূচি
সংগঠনঃ যে সব ছাত্র ইসলামী জীবন বিধান প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে অংশ নিতে প্রস্তুত তাদেরকে সংগঠনের অধীনে সংগবদ্ধ করা।
দিতীয় দফার কাজঃ ২ টি
১. মানগত : কর্মী, সাথী, সদস্য
২. কর্মী বেঠক, সাথী বৈঠক, সদস বৈঠক, কর্মী যোগাযোগ, পরিকল্পনা, বায়তুলমান, সফর, দায়িত্বশীল নির্বাচন।
কর্মীঃ যে সমর্থক সক্রিয়ভাবে দাওয়াতী কাজ করে, বায়তুলমাল এয়ানত দেন, কর্মী সভায় নিয়মিত যোগদান করেন, ব্যক্তিগত রিপার্ট রাখেন তাকে আমরা কর্মী বলে থাকি।
কর্মীর কাজঃ ৮ টি
১. কুরআন, হাদীস নিয়মিত বুঝে পড়ার চেষ্টা করা
২. নিয়মিত ইসলামী সাহিত্য পড়া
৩. ইসলামের প্রাথমিক দাবীসমূহ মেনে চলার চেষ্ট করা
৪. বায়তুলমাল নিয়মিত এয়ানত দেয়া
৫. কর্মী সভা, সাধারন সভা প্রভৃতি প্রোগ্রামে যোগদান
৬. সংগঠন কতৃক অর্পিত দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করা
৭. নিয়মিত রিপোর্ট রাখা ও দেখানো
৮. অপরের কাছে সংগঠনের দাওয়াত পৌছানো
সাথী হওয়ার শর্তঃ ৪ টি
১. সংগঠনের লক্ষ্য উদ্দেশ্যের সাথে একমত পোষন করা
২. সংগঠনের কর্মসূচি ও কর্মপদ্বতির সাথে একমত হওয়া
৩. ইসলামের প্রাথমিক দায়িতসমূহ পালন করা
৪. সংগঠনের সামগ্রিক তৎপরতায় পূর্ণভাবে সহায়তা করার প্রতিশ্রুতি দেয়া
কর্মী যোগাযোগের পদ্বতিঃ ৭ টি
১. পরিকল্পনা গ্রহন
২. সময় ও স্থান নির্ধারন
৩. ঐকান্তিকতা
৪. ব্যক্তিগত ও পারিবারিক সমস্যা আলোচনা
৫. সাংগঠনিক আলোচনা
৬. সার্বিক আন্দালনের আলোচনা
৭. সালাম ও দোয়া বিনিময়
      পরিকল্পনার বিষয়সমূহঃ ৬ টি
১. জনশক্তির শ্রেণী বিন্যাস
২. কর্মীর মান
৩. কাজের পরিধি ও পরিসংখ্যানমূলক তথ্য
৪. অর্থেনতিক অবস্থা
৫. পারিবারিক অবস্থা
৬. বিরাধী শক্তির তৎপরতা

রিপোটিং: পরিকল্পনার মেয়াদ উত্তীর্ন হওয়ার পর কাজের সুষ্ঠু পর্যালোচনার জন্যে নিয়মিত রিপোটিং প্রণয়ন অপরিহার্য। রিপোর্টের উপর সামষ্টিক পর্যালোচনা বাঞ্ছনীয়। অধ:সত্মন সংগঠনগুলো নিয়মিতভাবে উধর্্বতন সংগঠনে রিপোটিং প্রেরন করবে।
 তৃতীয় দফা কর্মসূচি
প্রশিক্ষনঃ এই সংগঠনের অধীনে সংঘবদ্ধ ছাত্রদেরকে ইসলামী জ্ঞান প্রদান এবং আদর্শ চরিত্রবানরুপে গড়ে তুলে জাহেলিয়াতের সমস্ত চ্যালেঞ্জ্যের মোকাবিলায় ইসলামের শ্রেষ্ঠত্ব প্রমান করার যোগ্যতাসম্পূর্ণ কর্মী হিসেবে গড়ার কার্যকরী ব্যবস্থা করা।
এ দফার কাজঃ ১৩ টি
১. পাঠাগার প্রতিষ্ঠা করা
২. ইসলামী সাহিত্য পাঠ ও বিতরন
৩. পাঠচক্র, আলাচনা চক্র, সামষ্ঠিক অধ্যয়ন ইত্যাদি
৪. শিক্ষাশিবির ও শিক্ষাবৈঠক
৫. সপীকারস ফোরাম
৬. লেখক শিবির
৭. শব্বেদারী
৮. সামষ্টিক ভোজ
৯. ব্যক্তিগত রিপোর্ট সংরক্ষন
১০. দোয়া ও নফল ইবাদত
১১. এহ্তেসাব ও গঠনমূলক সমালোচনা
১২. আত্নসমালোচনা
১৩. কুরআন তালীম
আত্নসমালোচনার পদ্ধতি: ৭ টি
১. সময় নির্বাচনঃ ফজর, ঈশা ও ঘুমানোর সময়।
২. আল্লাহকে হাজির নাজির জানা।
৩. সারা দিনের কর্মবস্ততা স্মরন করা ভালো কাজের শুকরিয়া, খারাপ কাজের জন্য তওবা করা।
৪. আদায়কৃত ফরজ ওয়াজিব আন্তরিকতার সহিত পালন করা হয়েছে কিনা চিন্তা করা।
৫. সাংগঠনিক সময় সামর্থ অনুসারে দেওয়া হয়েছে কিনা চিন্তা করা।
৬. ব্যবহারিক জীবন সমপর্কে চিন্তা করা।
৭. আল্লাহর কাছে সাহায্য প্রার্থনা করা।
তওবার নিয়মঃ ৪ টি
১. ঐকান্তিকতার সাথে নিজ ভুলের স্বীকার করা।
২. ভুলের জন্য আল্লাহর কাছে সাহায্য প্রার্থনা করা।
৩. দ্বিতীয়বার ভুল না করার জন্য ওয়াদা করা।
৪. নামাজ রোজা বা কুরবানীর মাধ্যমে কাফফারা দেওয়া।
 চতুর্থ দফা কর্মসূচি
ইসলামী শিক্ষা আন্দোলন ও ছাত্রসমাজঃ আদর্শ নাগরিক তৈরীর উদ্দেশ্যে ইসলামী মূল্যবাধের ভিত্তিতে শিক্ষা ব্যবস্থার পরিবর্তন সাধনের দাবীতে সংগ্রাম ত্রবং ছাত্র সমাজের প্রকৃত সমস্যা সমাধানের সংগ্রামে নেতৃত্ব প্রদান।
ইসলামী শিক্ষা প্রতিষ্ঠার সংগ্রাম এর কাজসমূহ: আমাদের কর্মীদেরকে প্রথমত জেনে নিতে হবে (ক) ইসলামী শিক্ষা ব্যবস্থা বলতে কি বুঝায় (খ) ইসলামী শিক্ষা ব্যবস্থার বৈশিষ্ট্য কি কি (গ) ইসলামী শিক্ষা ব্যবস্থা কিভাবে প্রবর্তন করা যায় (ঘ) বর্তমান শিক্ষা ব্যবস্থার দোষ ক্রটি কি কি (ঙ) বর্তমান শিক্ষা ব্যবস্থার মৌলিক গলদ কোথায় ইত্যাদি।
এ দফার দুইটি দিকঃ
১.ব্যক্তিগত: লজিং, স্টাইপেন্ড, লেডিং লাইব্রেরী, ফ্রি কোচিং, বিনামূল্যে প্রশ্নপত্র বিলি
২.সামষ্টিক:
ক) কারণ নির্ণয়
খ) স্মারক লিপি প্রদান
গ) আলাপ আলোচনা
ঘ) পোষ্টারিং
ঙ) পত্রিকায় লিখন
চ) প্রতিবাদ সভা
ছ) নিবদ্ধ প্রস্তাব গ্রহন
জ) নিয়মতান্তিক আন্দোলন করা
ঝ) ধর্মঘট
 পঞ্চম দফা কর্মসূচি
ইসলামী সমাজ বিনির্মানঃ অর্থনৈতিক শোষন, রাজনেতিক নিপীড়ন ত্রবং সাংস্কৃতিক গোলামী হতে মনবতার মুক্তির জন্য ইসলামী বিপ্লব সাধনে সর্বাত্বক প্রচেষ্টা চালানো।
        প্রথমত: ক্যারিয়ার সৃষ্টি, নেতৃত্ব সৃষ্টি, কর্মী সৃষ্টি, জ্ঞান অর্জর্ন
        দ্বিতীয়ত: সহযোগিতা, পরিবেশ

পরিবেশ সৃষ্টি ও চাপ: চারিত্রিক মাধুয্য দিয়ে জাতীয় জীবনে একটি পবিত্র পরিবেশ সৃষ্টির তৎপরতা চালাতে হবে। এ তৎপরতা যখন উল্লেখযোগ্য পরিমান ছাত্রদেরকে সংশ্লিষ্ট করতে পারবে তখন সমাজ ও জাতীয় জীবনে তা একটি শক্তি রুপে আত্নপ্রকাশ করবে। আর এহেন চারিত্রিক শক্তি দিয়ে আমরা কর্তৃপক্ষের উপর চাপ সৃষ্টি করতে পারবো।

চরিত্র গঠনের মৌলিক উপাদান
নঈম সিদ্দিকী
ভূমিকাঃ
১. শয়তানের তৎপরতাঃ
মানুষের তৎপরতা বৃদ্বির সাথে সাথে শয়তানের তৎপরতা ও বৃদ্বি পায়। শয়তানের চ্যালেঞ্জ যে মানুষের সামনে, পিছনে, উপরে, নিচে চতর্দিক থেকে আক্রমন করবেবর্তমান পুঁজিবাদ ও সমাজবাদ এর বাস্তব চিত্র।
২. স্বার্থপরতাঃ
এলাকার সংক্রামক ব্যাধি হতে দেখে দূরে অবস্থান যেমন স্বার্থপরতা তেমনি বর্তমানে কেউ ঈমান নিয়ে মসজিদের কোনে আশ্রয়, নেয়াটাই স্বার্থপরতার সামিল।
৩. ঈমানের পুঁজিঃ
বাজারে আবর্তনের মধ্যে পুঁজির স্বার্থকতা। সিন্দুকে পড়ে থাকা পুঁজি যেমন কোন মুনাফা বয়ে আনতে পারে না তেমনি চরিত্র রুপ পুঁজি কোন মুনাফা বয়ে আনতে পারে না। কিন্তু জনসমক্ষে খাটানোর মধ্যেই রয়েছে চরিত্রের স্বার্থকতা।

চরিত্র গঠনের মৌলিক উপাদানঃ ৩টি
১. খোদার সাথে যথার্থ সম্পর্কঃ
ক) পূর্ণনিয়মানুবর্তিতার সাথে মৌলিক ইবাদতসমূহ পালন করা
খ) কুরআন, হাদীস সরাসরি অধ্যয়ন করা
গ) নফল নামাজের উপর যথসম্ভব গুরুত্বারোপ
ঘ) সার্বক্ষনিক দোয়া ও যিকির

২. সংগঠনের সাথে সম্পর্ক:
কর্মীদের করণীয়ঃ
ক) আদেশ ও আনুগত্যের ভারসাম্য রক্ষা করা।
খ) অন্ধ আনুগত্য পরিহার করা।
গ) ব্যক্তির, রুচি, প্রকৃতি ও প্রবনতার কারনে আনুগত্য কম বেশী করা যাবে না।
ঘ) কতর্ত্বশালীদের সুন্দর আচরন ও মনমেজাজের অধিকারী হতে হবে।
ঙ)কর্তৃত্ব ও আনুগত্যের কতিপয় আরো বিষয়াবলীঃ
= দায়িত্বশীল কর্তৃক কোন সার্কুলার জারী করা হলে তা যথাযথভাবে পালন করতে হবে।
=
কোন প্রোগ্রামের নির্ধারিত পদ্ধতি যথাযথভাবে পালন করতে হবে।
=
দলীয় শৃংখলার আনুগত্যে ক্রটি করলে, মিথ্যা সাক্ষী দিলে, চুরি করলে, কারো অর্থ আত্নসাৎ করলে, গীবত করলে সাথে সাথে অনুতপ্ত হলে আল্লাহর নিকট ক্ষমা চাইতে হবে।
=
সংগঠনকে আল্লাহ ও রাসূলের পক্ষ থেকে ত্রকটি আমানত মনে করে প্রত্যেক সহযোগীকে ব্যক্তিগতভাবে ত্রর রক্ষনাবেক্ষনের দায়িত্ব পালন করতে হবে।

দায়িত্বশীলদের করনীয়ঃ
      ক) সংগঠনের সাথে সংশ্লিষ্ট সকলের সাথে সুন্দর ব্যবহার করতে হবে।
   খ) সহযাগীদের দুর্বলতাগুলো মাফ করে দেয়ার, মনকে কলুষিত না করার ও নিরাশ না হওয়ার মানষিকতা থাকতে হবে, বিভিন্ন সময় মাঝে মাঝে সহযাগীদের সাথে পরামর্শ করতে হবে।

৩. সহযোগীদের সাথে সম্পর্কঃ
ক) কোন খবর বা বিবরণ শুনার পর সঙ্গে সঙ্গে সিদ্বান্ত নেয়া ঠিক নয়।
খ) ত্রকে অন্যকেঃ ত্রক দল অন্য দলকে বিদ্রপ করা উচিত নয়।
গ) অন্যের গীবত করা বা কারো সমপর্কে কুধারনা করা মোটেই উচিত নয়।
পরিশেষে, যদি আমরা খোদার সাথে সম্পর্ক কায়েমের যথাযথ ব্যবস্থা করে দলীয় নীতি ও শৃংখলার আনুগত্য করি এবং উলি্লখিত নৈতিক গুনাবলী নিজেদের মধ্যে সৃষ্টি করে কর্মক্ষেত্রে ঝাঁপিয়ে পড়ি তাহলে ইনশাআল্লাহ, আমাদের ব্যর্থতার সামান্যতম সম্ভাবনাও নেই। খোযদি আমাদেরকে স্বয়ংসমপূন্ন হওয়ার তিনটি সুযোগ দেন, তাহলে বিশ্বাস করুন আমরা ব্যবসায়ে যে পুঁজি খাটাচিছ তা কয়েকগুন অধিক মুনাফাদানে সক্ষম হবে।
সত্যের সাক্ষ্য
লেখকঃ সাইয়েদ আবুল আলা মওদূদী (র:)

সাক্ষ্য: নিজে যা জানে তা অন্যের কাছে বলা বা যথাযথভাবে প্রকাশ করার নামই সাক্ষ্য।
সত্যের সাক্ষ্য: আল্লাহর পক্ষ থেকে যে সত্য এসেছে, উদ্ভাসিত হয়েছে, তার সত্যতা দুনিয়ার সামনে এমনভাবে প্রকাশ করা যাতে দ্বীনের যথার্থতা প্রমানিত হয়, এটাই সত্যের সাক্ষ্য।

সত্যের সাক্ষ্য দানের গুরুত্ব:
      ১. সাক্ষ্যদানের ভিতিত্তেই হাশরের ময়দানে ফয়সালা হবে।
২. সাক্ষ্যদান সকল নবীর সুন্নাত।
৩. সত্যের সাক্ষী না হলে যালেমদের অন্তভূক্ত হবে
৪. সাক্ষ্য না দিলে দুনিয়ার লাঞ্জনা, অপমান, অধ:পতন চেপে বসবে।
৫. সাক্ষ্য দান আল্লাহর পক্ষ থেকে দেয়া দায়িত্ব।

সাক্ষ্যদানের প্রকারভেদ: ২ প্রকার
১. মৌখিক সাক্ষ্য:
          নবী (সা:) এর মাধ্যমে আমাদের কাছে যে সত্য এসে পৌছেছে তা বক্তৃতা ও লেখনীর মাধ্যমে মানুষের কাছে সহজবোধ্য করাকে মৌখিক সাক্ষ্য বলে।
দাওয়াতের সকল পদ্ধতি প্রয়োগ ও জ্ঞান বিজ্ঞানের সকল উপাদান ব্যবহার করে ইসলামকে একমাত্র সঠিক পরিপূর্ণ বিধান হিসাবে প্রমান এবং প্রতিষ্ঠিত বাতিল মতাদর্শের দোষ ক্রটি তুলে ধরা।
২. বাস্তব সাক্ষ্য:
       যা মুখে বলা হয় তা বাস্তবায়নের মাধ্যমে মানুষের সামনে তার সত্যতা প্রমান। সৌন্দর্য্য ও কল্যানকারীতা প্রদর্শন করা নয়।

সাক্ষ্য দানের পূর্ণতা: আল্লাহর দ্বীনকে পরিপূর্ণভাবে মানতে পারলেই দ্বীনের পূর্ণ সাক্ষ্য প্রদান হবে। ইসলাম প্রতিষ্ঠিত না থাকলে দ্বীনকে পরিপূর্ণভাবে মানা সম্ভব নয়। সুতরাং শুধুমাত্র দ্বীন প্রতিষ্ঠার মাধ্যমেই সাক্ষ্যদানের পূর্ণতা সম্ভব।

সত্য গোপনে শাস্তি:
১. দুনিয়ার শাস্তি:
= গোটা দুনিয়ায় মুসলমানরা নির্যাতিত।
= পূর্বে ইসলাম প্রতিষ্ঠিত স্থানগুলো মুসলমানদের স্থানচু্যত হয়ে যাওয়া।
২. আখেরাতের শাস্তি: সত্যের সাক্ষ্য না দিলে দুনিয়ায় অশান্তি সৃষ্টি হয়। দায়িত্ব পালন না করার কারনে পরকালে কঠিনতম শাস্তি ভোগ করতে হবে।

মুসলমানদের সমস্যা:
      চিন্তার ক্রটি: অন্যান্য জাতি পার্থিব যেসব সমস্যাকে মূল সমস্যা হিসেবে গুরুত্ব দেয় আমরাও সেসব বিষয়কে একই ভাবে গুরুত্ব দিই।
যেমন: সংখ্যালঘু হিসেবে মুসলিম।
       সঠিক চিন্তা: যাবতীয় সমস্যার উৎস মূল দায়িত্ব তথা সত্যের সাক্ষ্যদান হতে বিমুখতার পরিনতি। কারন এ দায়িত্ব পালন না করার কারনেই অন্যেরা এসব সমস্যার সৃষ্টির সুযোগ পাচ্ছে।
যেমন: আর যে সংখ্যালঘু মুসলিম জাতি সাক্ষ্যদানের মাধ্যমে সংখ্যাগুরুত্ব এ পরিনত হয়েছে।

সমস্যার সমাধান:
যাবতীয় সমস্যা সমাধানের পথ হচ্ছে যথাযথভাবে সত্যের সাক্ষ্য পেশ করা।
আসল সমস্যা: দুনিয়ায় মুসলিম হিসাবে প্রতিনিধিত্বের দাবী ইসলামের, বাস্তবে ইসলাম বিরোধী মতবাদের প্রতিনিধিত্ব করি।
ফলাফল:
= দুনিয়ার মানুষ ইসলাম সম্পর্কে ভুল তথ্য জানছে।
=
মানুষ আমাদের কারনে ইসলাম সম্পর্কে জানতে পারছে না।
মুসলমানদের দুনিয়ায় ব্যর্থতার কারণ: ইসলামের লেবেল খুলে দিয়ে কুফরী গ্রহন করলে দুনিয়াবী জিন্দেগী চাকচিক্যময় হত। কিন্তু নাম ও কর্ম সংঘাত হওয়ায় উন্নতিও বন্ধ।
আমাদের কর্মপদ্ধতি:
    = মুসলমানদের ইসলাম সম্পর্কে মৌলিক জ্ঞান প্রদান এবং তাদের দায়িত্ব সম্বন্ধে সচেতন করা।
    =
শুধু ব্যক্তিজীবন নয় ইসলামকে মানা এবং প্রতিষ্ঠার জন্য সামষ্টিক বা সংগঠনিক প্রচেষ্ঠা প্রয়োজন। এটা বুঝিয়ে দেয়া।

কাজের পথ:
= আমাদের নিয়ম, শৃংখলা, কর্মনীতি, আকীদা ভাল লাগলে আমাদের সাথে যোগদান করা।
=
অন্যদলকে আমাদের চেয়ে খাটি মনে হলে সে দলে যোগ দেয়া।
=
কোন দল খাটি মনে না হলে নিজের উদ্যোগে দল গঠন করা।
দ্বীনের একাধিক দল গঠনের আশংকা: আপাতত দৃষ্টিতে ইসলামী দল বেশি হলে বিশৃংখলা দেখা দিবে।
একাধিক দল গঠনের কারণ:
নবী করীম সা: পরিচালিত সংগঠনই শুধুমাত্র আল জামায়াত হিসাবে দাবী করতে পারে। অন্য কোন দলকে আল জামায়াত বলা যাবে না। সুতরাং দ্বীনের জন্য একাধিক দল গঠনে বাধা নেই।
ফলাফল: নিষ্ঠার সাথে সবাই কাজ করলে লক্ষ্য যেহেতু একই সেহেতু মাঝপথে মিলিত হবে।
ভাঙ্গা ও গড়া
সাইয়েদ আবুল আলা মওদূদী (র:)
বই পরিচিতি:
     ভারত বিভাগের পূবাহ্নে পূর্ব পাঞ্জাবে যে সামপ্রদায়িক দাঙ্গা সংগঠিত হয় তার তিন মাস পূর্বে ১৯৪৭ সালের ১০ ই মে পাঠানকোটের দারুল ইসলামে অনুষ্ঠিত সাধারন সভায় মাওলানা সাইয়েদ আবুল আলা মওদূদী (র:) এর প্রদত্ত ভাষণ।
এই বক্তৃতার প্রাদিপাদ্য হিসাবে তিনি স্রষ্টার এই সুন্দর পৃথিবীকে ধ্বংসাত্বক কাজের মাধ্যমে না ভাঙ্গিয়া, গঠনমূলক কাজের মাধ্যমে গড়িতে দেশবাসীকে উদ্ধুদ্ধ করেন এবং যাদের গঠনমূলক কাজের যোগ্যতা বেশি প্রাকৃতিক নিয়মের গতিধারায় তাদের হাতেই যে কর্তৃত্ব আসিবে, আল্লাহই সেই শ্বাশত বিধান স্মরন করাইয়া দেন।

ভাঙ্গা ও গড়া বইয়ের বিষয়বস্তু:
মানুষের ভাল মন্দের জন্য আল্লাহ যে নিয়ম-নীতি নির্ধারন করেছেন তা কারোর চেষ্টায় পরিবর্তিত ও বাতিল হতে পারে না। তার ভেতর কারো সঙ্গে শত্রুতা এবং কারো সঙ্গে স্বজনপ্রীতি নেই। আল্লাহ এ আইনের সর্বপ্রথম ও সর্বাপেক্ষা গুরুত্বপূর্ণ ধারা হচ্ছে এই যে, তিনি গড়া পছন্দ করেন এবং ভাঙ্গা পছন্দ করেন না। সবকিছুরই মালিক হিসাবে তিনি তার দুনিয়াকে সঠিকভাবে পরিচালিত করতে চান।
* যে সমস্ত লোক দুনিয়া পরিচালনার ক্ষমতা লাভ করতে চায় তাদের ভেতর থেকে কেবলমাত্র তারাই আল্লাহর দৃষ্টিতে যোগ্যতা সম্পূর্ণ হয়। যারা এ দুনিয়াকে গড়বার যোগ্যতা অন্য সবার চেয়ে বেশি রাখে এরুপ যোগ্যতাসসম্পূণ লোকদেরকেই তিনি দুনিয়া পরিচালনার দায়িত্ব অর্পন করে থাকেন।
* অতএব এসব ক্ষমতাসীন লোকেরা কতটুকু ভাঙ্গে এবং কতটুকু গড়ে সেদিকে তিনি তীক্ষ্ন দৃষ্টি রাখেন। যতক্ষন পর্যন্ত তারা ভাঙ্গার চেয়ে গড়তে থাকে বেশি এবং তাদের চেয়ে বেশি গড়ে ও কম ভাঙ্গে এমন কেউ কর্মক্ষেত্রে থাকে না, ততক্ষন পর্যন্ত আল্লাহ তাদের সমস্ত দোষ-ক্রটি সত্তেও দুনিয়া পরিচালনার ক্ষমতা তাদের হাতেই রাখেন। কিন্তু যখন তারা গড়ে কম এবং ভাঙ্গে বেশি তখন আল্লাহ তাদেরকে ক্ষমতাচু্যত করে অন্য লোকদেরকে ঐ একই শর্তে ক্ষমতা দিয়ে থাকেন।
* এ ব্যাপারে সব সময়ই মালিকের যে দৃষ্টিভঙ্গি হওয়া উচিত, আল্লাহও তাই করে থাকেন। তিনি তার দুনিয়া পরিচালনা করার ক্ষেত্রে দাবীদার ও প্রার্থীদের উত্তরাধিকার অথবা জম্মগত অধিকার দেখেন না। তিনি দেখেন কার গড়ার যোগ্যতা বেশি এবং ভাঙ্গবার দিকে ঝোকপ্রবনতা কম রয়েছে। একই সময়ের প্রার্থীদের মধ্যে যারা এ দিক দিয়ে যোগ্যতার বলে প্রমাণিত হয় তাদেরকেই দেশ পরিচালনার জন্য নির্বাচন করা হয়। যতদিন এদের ধ্বংসাত্বক কাজের চেয়ে গঠনমূলক কাজ বেশি হতে থাকে অথবা এদের তুলনায় বেশি ভাল করে গঠনমূলক কাজ করে এবং ধ্বংসাত্বক কাজও কম করে এমন কেউ এগিয়ে না আসে ততদিন দেশ পরিচালনার ক্ষমতা এদের হাতেই রাখা হয়।

মানব জীবনে যে সব কারনে ভাঙ্গন সৃষ্টি হয় সেগুলোকে আমরা চার ভাগে ভাগ করতে পারি:
১. আল্লাহকে ভয় না করা।
২. আল্লাহর বিধান মেনে না চলা।
৩. স্বার্থপরতা।
৪. জড়তা ও বিপথগামিতা।

অপরদিকে মানুষের জীবন যেসব উপায়ে সুন্দররুপে গড়ে ওঠে তাকেও চার ভাগে ভাগ করা যায়:
১. আল্লাহ ভীতি
২. আল্লাহর বিধান অনুযায়ী জীবন যাপন করা।
৩. মানবতার ব্যবস্থা
৪. সৎ কাজ
* এই চারটি বিষয়ের সন্তুষ্টির নাম হচ্ছে গড়া ও সংশোধন। আমাদের ভেতরকার সৎ লোকদের সমন্বয়ে গঠিত সংগঠনের মধ্যে রয়েছে আমাদের সকলের কল্যান। এ সংগঠন সমস্ত প্রকার ধ্বংসাত্বক কাজ ও ভাঙ্গনের পথ বন্ধ করবে এবং উল্লেখিত উপায়ে গঠনমূলক কাজের মাধ্যমে অবিরাম গড়ার প্রচেষ্টা চালাবে। এ প্রচেষ্টা এ দেশবাসীকে সঠিক পথে আনতে সফল হলেও আল্লাহ দেশের শাসন ক্ষমতা অযথা দেশের অধিবাসীদের কাছে থেকে ছিনিয়ে নিয়ে অন্যকে দিয়ে দিবেন এমন অবিচারক তিনি নন। কিন্তু যদি এতে সফলকাম না হওয়া যায় তাহলে আমাদের, আপনাদের ও সমস্ত দেশবাসীর পরিনাম কি হবে তা বলা যায় না

একটি আদর্শবাদী দলের পতনের কারণ: তার থেকে বাঁচার উপায়

আব্বাস আলী খান


প্রকাশকের কথা:
বইটি ১৯৯৮ সালে প্রথম প্রকাশিত । ইসলামী সমাজ ব্যবসহা প্রতিষ্ঠা করার জন্য দরকার একটি আদর্শবাদী মজবুত সংগঠন         
 
আদর্শবাদী দল: প্রতিষ্ঠিত সমাজ ব্যবস্থা সমূলে উৎপাটিত করে তার স্থলে সম্পূর্ণ ভিন্ন করে এক সমাজ ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করতে হলে একটি আদর্শ বেছে নিতে হয়। এর সাথে পৃথক চিন্তাধারা ও থাকে। এ চিন্তা ও আদর্শের সাথে যারা সকল দিক থেকে একমত পোষণ করে তারা একটি দল গঠন করে । একে বলা হয় একটি আদর্শবাদী দল।
ü এ দল ইসলামী হতে পারে ,ইসলামী বিরোধী ও হতে পারে
ü সমাজ বিপ্লবের জন্য আদর্শের ছাচে ব্যক্তি গঠন আবশ্যক।
ü দলের নেতা কর্মীদের হতে হয় নির্ভী, সাহসী ও ধৈর্যশীল। বিশেষ করে নেতাকে হতে হয় গতিশীল, দূরদর্শী,সমসাময়িক সকল সমস্যা সম্পর্কে পূর্ণ সচেতন এবং চরম সংকট মূহুর্তে সঠিক সিদ্ধান্ত গ্রহন কারী ।
ü এ দলের চরম ও পরম লক্ষ্য হলো আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন ।
ü  বাংলাদেশ জামায়াত ইসলামী একটি আদর্শবাদী দল। এ দলের সূচনা অবিভক্ত ভারতে ১৯৪১ সালে।

দারূল ইসলাম ট্রাস্ট গঠন ও ইসলামী আন্দোলনের লক্ষ্যে দল গঠনের পটভূমি রচনা:
১৯৩৭ সালে আল্লামা ইকবাল হায়দারাবাদ থেকে পাঞ্জাবে হিজরত করার জন্য মাওলানা মাওদূদীকে আহ্বান করেন।
কতিপয় উন্মাদের প্রয়োজন: এমন উন্মাদ যে জেনে-বুঝে আগুনে ঝাঁপ দিতে প্রস্তুতি। দারূল ইসলামী ট্রাস্ট এ লক্ষ্যে প্রতিষ্ঠিত এবং ১৯৪১ সালের আগষ্ট মাসে মাওলানার কথিত ৭৫ জন উন্মাদ নিয়ে জামায়াত ইসলামী প্রতিষ্ঠিত।
        
জামায়াতের কাজ কি ?
            দুনিয়াতে জামায়াতে ইসলামীর জন্য করার যে কাজ রয়েছে, সে সম্পর্কে সীমিত কোন ধারণা পোষণ করা যাবে না বরং তার কাজের পরিধির মধ্যে রয়েছে পূর্ণ প্রসারতা সহ গোটা মানব জীবন।
ইসলামী আন্দোলন এক সর্বব্যাপী আন্দোলনের নাম।
=
জামায়াতে ইসলামীর সদস্যদের কুরআন ,সীরাতুন্নবী ও সীরাতে সাহাবার প্রতি অনুরাগ থাকা।
=
আল্লাহর প্রতি তাওয়াক্কুল করা।
= চরিত্র ও আচার আচরণে মান সংরক্ষণ করা।
 
আদর্শবাদী দলের পতনের কারণ-তার থেকে বাঁচার উপায়:
বিকৃতি ও পতনের কারণগুলো নিম্নরুপ:
১. দলের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্যকে জীবনের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য হিসেবে গ্রহন না করা।
২. কুরআন হাদীস ও ইসলামী সাহিত্য অধ্যয়ন না করা ।
৩. সময় ও আর্থিক কুরবানীর প্রতি অবহেলা ।
৪. দলীয় মূলনীতি মেনে না চলা ।
৫. ইনসাফ প্রতিষ্ঠা না করা।
৬. ভ্রাতৃত্ববোধের অভাব।

৭. নিম্নলিখিত কারণে পারষ্পরিক সম্পর্ক বিনষ্ট হয়:
     ক. পারষ্পরিক হিংসা বিদ্বেষ।
       খ. গীবত,পরনিন্দা ও পরচর্চা।
       গ. পরশ্রীকাতরতা।
       ঘ. একে অপরকে সন্দেহের চোখে দেখা ।
       ঙ. কারো বিপদে আপদে তার খোঁজ-খবর না নেয়া।
       চ. পরষ্পর বৈষয়িক স্বার্থে ঝগড়া বিবাদে লিপ্ত হওয়া
       ছ. অযথা কারো প্রতি কু-ধারণা পোষণ করা।
  
  ৮. নিম্নলিখিত কারণে একটি ইসলামী দল তার প্রকৃত পরিচয় হারিয়ে ফেলে এবং নিষ্ক্রিয় ও প্রাণহীন হয়ে পড়ে।
          ক. জনশক্তির মধ্যে নৈরাশ্য ও হতাশা সৃষ্টি হওয়া।
খ. নেতৃত্বের অভিলাষ।
গ. অর্থ-সম্পদের প্রতি লালসা ।
ঘ. জীবন মান উন্নত করার প্রবণতা।
ঙ. সহজ সরল জীবন যাপন না করা।

তার থেকে বাঁচার উপায়:
           ১. নামাজের মাধ্যমে আল্লাহর সাথে গভীর সম্পর্ক স্থাপন।
২. অতিরিক্ত যিকির আযকার।
৩. আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন।
৪. আত্মসমালোচনা।
৫. ক্রোধ দমন করা।
৬. মৌলিক বিষয়ে একমত পোষণ ।
৭. বিরোধী পরিবেশ দ্বারা প্রভাবিত না হওয়া ।
৮. নেতৃত্বে দুর্বলতা পরিহার।
৯. নেতৃত্বের প্রতি অনাস্থা আন্দোলনের পতন ডেকে আনে।
১০. সমস্যার ত্বরিত ও সঠিক সমাধান ।
১১. ত্যাগ ও কুরবানী।
১২. বাইতুলমালে আমানতদারীতা ও সততা।
১৩. দাওয়াত ও তাবলীগ এবং তরবিয়তি নিজাম


হেদায়াত
লেখক-সাইয়েদ আবুল আলা মওদূদী, অনুবাদক-মাওলানা আব্দুর রহিম

বই পরিচিতি:  ১৯৫১ সালের ১৩ই নভেম্বর করাচিতে জামায়াতের বার্ষিক সম্মেলনের প্রদত্ত বক্তব্য।
আল্লাহ তায়ালার সাথে সম্পর্ক:
১. আকীদা-বিশ্বাসের ব্যাপারে আল্লাহর প্রতি ঈমান।
২. ইবাদাতের বেলায় আল্লাহর সাথে নিবিড়তর সম্পর্ক স্থাপন।
৩. নৈতিক চরিত্রে আল্লাহর প্রতি ভয় পোষণ এবং আচার-ব্যবহার ও লেনদেনের বেলায় আল্লাহ তায়ালার সন্তুষ্টি লাভ করাকেই প্রাধান্য দেয়া দরকার।
আল্লাহ তায়ালার সাথে সম্পর্ক স্থাপনের অর্থ:
১. নিজ জীবনের সকল কিছু একমাত্র আল্লাহর জন্য।
২. সকল কাজে একমাত্র আল্লাহকে ভয় করা।
৩. বন্ধুত্ব, শত্রুতা, লেনদেন শুধু তার সন্তুষ্টির জন্য।
৪. সকল অবস্থায় শুধু তার উপর ভরসা করা।
৫. নিজের চলার পথকে শুধু আল্লাহর নির্দেশিত সীমায় রাখা।
আল্লাহ তায়ালার সাথে সম্পর্ক বৃদ্ধির উপায়: ২টি
১. চিন্তা ও গবেষনা:
ক) নিয়মিত কোরআন,হাদীস ও ইসলামী সাহিত্য অধ্যয়ন ও এবং সম্পর্কের ধারনা লাভ।
    খ) সম্পর্কের অনুভূতি লাভ এবং সার্বক্ষনিক স্মরন।
গ) নিজ অবস্থায় আত্নসমালোচনা ;সম্পর্কের মান/ দাবী।
 ২. বাস্তব কাজের পন্থা:
ক) সঠিক পথে চলার তীব্র আকাক্ষা।
খ) নিজের আকর্ষনের মান পর্যালোচনা, অভাব দেখা মাত্র পূরনের চেষ্টা করা।
গ) অসৎ সঙ্গ পরিত্যাগ করে সৎ সঙ্গ লাভ।
ঘ) নিজের চেষ্টা ব্যতিত গুনের হ্রাস বৃদ্ধি সম্ভব নয়।
আল্লাহর সাথে সম্পর্কের বিকাশ সাধনের উপকরণ:
        ১. সালাত
২. আল্লাহর যিকর
৩. সাওম
৪. আল্লাহর পথে অর্থ খরচ করা
আল্লাহ তায়ালার সাথে সম্পর্ক যাচাই করার উপায়:
স্বপ্নযোগে অথবা কাশফ,কারামত যাহির করার প্রয়োজন নেই, অন্তরই যথেষ্ট।
#
যা বিশ্লেষন করতে হবে:
   ১. আল্লাহর সাথে কৃত চুক্তি পূরন করা।
      ২. আল্লাহর দেয়া আমানত রক্ষা করা
      ৩. নিজের স্বার্থে আঘাত লাগলে কেমন লাগে?
      ৪.খোদাদ্রোহীদের তৎপরতা কতটুকু যাতনা সৃষ্টি করে?
#
বড় কারামত:
     ১. চরম জাহেলিয়াতের মধ্যে অবস্থান করে তাওহীদের নিগুঢ় তত্ব অনুধাবন, অনুধাবন এটাই কারামত।
    ২. আল্লাহর পথে অটল থাকাই মুমিনের জন্য সাফল্যের সংবাদ।
আখেরাতকে অগ্রাধিকার দান: একমাত্র আখেরাতের সাফল্য আমাদের লক্ষ্য।
আখেরাতের চিন্তার লালন:

সার্বক্ষনিক অনুভূতির পন্থা -২টি।
১. চিন্তা ও আদর্শমূলক:
     ক) অর্থবুঝে কালামে পাক অধ্যয়ন:
# কুরআনের প্রতি পৃষ্ঠায় আখেরাত।
# আখেরাতের বিস্তারিত বিবরণ।
# স্থায়ী বাসভূমির জন্য অস্থায়ী বাসভূমিতে প্রস্তুতি গ্রহন।
খ) হাদীস অধ্যয়ন ও অনুধাবন:
# কুরআনের বিস্তারিত রুপ।
# রাসুল সা: কে জানার উপায়।
   #
রাসুল সা: ও সাহাবীদের ত্যাগ স্মরন
গ) কবর জিয়ারত: মৃতু্কে স্মরন।

পারস্পরিক সংশোধন ও এর পন্থা:
পারস্পরিক সমালোচনার সঠিক পন্থা:
       সকল স্থানে ও সকল সময়ে আলোচনা করা চলবে না বরং বিশেষ বৈঠকে আমীরে জামায়াতের প্রস্তাব কিংবা অনুমতিক্রমেই তা করা যেতে পারে।
        সমালোচনাকারী সর্বপ্রথম আল্লাহ তায়ালাকে হাযির-নাযির জেনে নিজের মনের অবস্থা সম্পর্কে বিচার-বিবেচনা করে দেখবেন যে, তিনি সততা ও শুভাকাংক্ষীর বশবর্তী হয়েই সমালোচনা করছেন, না কোন ব্যক্তিগত স্বার্থ এর মূলে সক্রিয় রয়েছে। প্রথমোক্ত অবস্থায় নি:সন্দেহে সমালোচনা করা যেতে পারে, অন্যথায় কোন প্রকার উচ্চবাচ্য না করে নিজের অন্তর হতে এ কালিমা রেখা দূর করার জন্য তার সচেষ্ট হওয়া উচিত।
          সমালোচনার ভঙ্গী ও ভাষা এমন হওয়া উচিত, যা শুনে প্রত্যেকেই বুঝতে পারবে যে, আপনি সত্যই সংশোধনের বাসনা পোষণ করছেন।
           সমালোচনার উদ্দেশ্যে কথা বলার পূর্বে আপনার অভিযোগের সমর্থনে কোন বাস্তব প্রমাণ আছে কিনা, তা অবশ্যই ভেবে দেখবেন। অহেতুক কারো বিরুদ্ধে কথা বলা অত্যন্ত কঠিন গুনাহ, এর ফলে সামাজিক জীবনে বিশৃংখলা দেখা দেয়।
             যে ব্যক্তির সমালোচনা করা হবে, তার অত্যন্ত ধৈর্য্য সহকারে সমালোচকের বক্তব্য শ্রবণ করা এবং সততার সাথে তা ভেবে দেখা কর্তব্য। অভিযোগের যে অংশ সত্য, তা অকপটে স্বীকার করা এবং যে অংশ সত্য নয় তা যুক্তি-প্রমাণ দ্বারা খন্ডন করা উচিত। সমালোচনা শুনে রাগান্বিত হওয়া অহংকার ও আত্মম্ভরিতার লক্ষণ।
              সমালোচনা এবং এর জবাবের ধারা সীমাহীনভাবে চলা উচিত নয়, কোন এতে একটি স্থায়ী বিরোধ ও কথা কাটাকাটির সূত্রপাত হতে পারে। আলোচনা শুধু উভয় পক্ষের বক্তব্য সুস্পষ্ট না হওয়া পর্যন্তই চলতে পারে। এরপরও যদি বিষয়টির মীমাংসা না হয়, তবে আলোচনা সেখানেই স্থগিত রাখুন, যেন উভয় পক্ষ ধীরস্থীরভাবে এবং শান্ত মনে নিজেদের বক্তব্য সম্পর্কে চিন্তা-ভাবনা করতে পারে।
আনুগত্য ও নিয়ম-শৃঙ্খলা সংরক্ষণ:

জামায়াতের নেতৃবৃন্দের প্রতি উপদেশ:
ক) অহেতুক কর্তাগিরি বা প্রভুত্বের স্বাদ গ্রহন নয়। নম্র ও মধুর ব্যবহার দিয়ে কথা বলতে হবে।
খ) ব্যবহারের ক্রটি কর্মীর মনে বিদ্রোহের জম্ম দিতে পারে।
গ) একই ধারা নয়, বরং অবস্থা, সুযোগ, সামর্থ বুঝে কাজ দিতে হবে।

ইসলাম ও জাহেলিয়াত

সাইয়েদ আবুল আলা মওদূদী (র:)


বই পরিচিতি:
১৯৪১ সালে ২৩শে ফেব্রুয়ারীতে ইসলামী কলেজের মসলিসে ইসলামীয়াতে প্রদত্ত ভাষণ-
ভূমিকা:
আচরনের সাধারন নীতি: -
= কোন ব্যক্তি বা বস্তুর সাথে সম্পর্ক স্থাপন, আচরন, ব্যবহারের পূর্বেই তার সম্পর্কে ধারনা নেয়া।
=
ব্যক্তি বা বস্তুর অভ্যন্তরীন নির্ভুল জ্ঞান লাভ করা সম্ভব না হলে বাহ্যিক নিদর্শন সমূহ থেকে ধারনা গ্রহন করতে হবে।
=
নির্ধারিত ধারনার ভিত্তিতে ভালবাসা, ভয়, সম্মান, উপেক্ষা, রক্ষনাবেক্ষন, পরিত্যাগ ইত্যাদি হয়ে থাকে।
=
প্রাপ্ত জ্ঞান বা ধারনা যত নির্ভুল হবে আচরন বা ব্যবহার তত নির্ভুল হবে।
জ্ঞানের সাধারন উৎস: যে কোন বিষয়ে জ্ঞান লাভের উৎস- ৩ টি।
    ১. ইন্দ্রিয়গ্রাহ্য পর্যবেক্ষন,
    ২. আন্দাজ, অনুমান বা অমূলক ধারনা, ৩. নির্ভূল বিজ্ঞান
মানব জীবনের মৌলিক সমস্যা:
১. মানব মনের স্বাভাবিক প্রশ্ন:
    ক) নিজ সত্ত্বা সম্পর্কিত প্রশ্ন।  খ) মানব সমাজ সম্পর্কিত প্রশ্ন।
    গ) বিশ্ব প্রকৃতি ও বস্তুজগৎ সম্পর্কিত প্রশ্ন।
২. মানব মান ও প্রশ্নের উত্তর:
  =
 সকল মানুষের মনে এর উত্তর বিদ্যমান তবে সকলের কাছে এর দার্শনিক উত্তর নাও থাকতে পারে।
  =  
চিন্তা সংগঠিত বা অসংগঠিত হতে পারে এবং এর ভিত্তিতে কর্ম সম্পাদিত হয়।
  =
 মানুষের সকল কর্ম তার একটি চিন্তা বা দর্শনের প্রতিফলন।
৩. উত্তরের গুরুত্ব:
  =
 উত্তরের গুরুত্ব ব্যক্তি, দল বা জাতির জন্যে সমান।
  =
এর ভিত্তিতে সমাজ,রাষ্ট্র বা সভ্যতার জন্য বিধান কর্মসূচী রচিত হয়।
  =  
এর ভিত্তিতে নৈতিক মূল্যায়ন নির্ধারন জীবনের বিভিন্ন দিক ও বিভাগের বাস্তবরুপ হবে।
  =
 চিন্তা ও দর্শন থেকে যেমন বাস্তব রুপায়ন হয় তেমনি বাস্তব আচরন থেকে চিন্তা বা দর্শন পাওয়া  যায়।
৪. প্রশ্নপত্রের উত্তরের উৎস:
  =
যেহেতু প্রশ্নগুলো ব্যক্তিগত কোন বিষয়ে নয় এ কারনে কোথাও উত্তর সুনির্দিষ্টভাবে লেখা নেই যে জম্মের পরপর পড়ে নিজ যোগ্যতা বলে বুঝে নিবে।
  =
উত্তর এমন সহজ ও সুস্পষ্ট নয় যে প্রত্যেকে তা সহজেই জেনে যাবে।
  = এ সকল পন্থায় প্রাপ্ত উত্তরসমূহ কি কি?
৫. উত্তর নির্ধারনের উপায়:
  =  
নিজের বাহ্যন্দ্রিয়ের উপর নির্ভর করা এবং তদলব্দ জ্ঞানের ভিত্তিতে উত্তর নির্ধারন।
  =  
ইন্দ্রিয়ের সাহায্যে পর্যবেক্ষন এবং এর সাথে অনুমান ধারনা যোগ করে একটি নীতি ঠিক করা।
  =
আল্লাহ প্রেরিত নবীগন প্রকৃত সত্য জানা দাবী করে উক্ত প্রশ্নাবলীর যে উত্তর দিয়েছের তা গ্রহন করা।
উত্তরের বিভিন্নতার প্রভাব:
 উত্তর লাভের জন্য আজ পর্যন্ত ব্যবহৃত পন্থা তিনটি।
প্রত্যেকটির উত্তর স্বতন্ত্র আচরন নীতি, নৈতিক আদর্শ স্বতন্ত্র, সাহিত্য সাংস্কৃতির ব্যবস্থাও স্বতন্ত্র।
নির্ভেজাল ও শিরক মিশ্রিত জাহেলিয়াতের পার্থক্য:
   =
শিরকে পূজা মানত অর্ঘ্য ইত্যাদি অনুষ্ঠানের আধিক্য নির্ভেজালে এসবের অস্তিত্ব নেই। কিন্তু নৈতিক চরিত্র ও কর্মের ক্ষেত্রে কোন তফাৎ নেই।
   = শিরকের শিক্ষা শিক্ষাদর্শন। সাহিত্য রাজনীতির জন্য পৃথক কোন মূলনীতি নেই। তাই নির্ভেজাল থেকে তা গ্রহন করে।
   =
মুশরিক কল্পনা বিলাসী। নির্ভেজাল বাস্তব কর্মী।
   =
শিরকের রাজ্যে রাজা ও ধর্মীয় নেতাগন খোদার আসনে। বংশ এবং শ্রেণী প্রধানের উপর এ মতবাদ প্রতিষ্ঠিত।
   =
নির্ভেজালের রাজত্বে পরিবার পূজা, বংশপূজা, জাতি পূজা, একনায়কতন্ত্র, সাম্রাজ্যবাদ, পুঁজিবাদ শ্রেণী সংগ্রামে পরিগ্রহ হয়।
  বৈরাগ্যবাদ: বাস্তব পর্যবেক্ষনের সাথে আন্দাজ অনুমানের সংমিশ্রনে মানব জীবনের মৌলিক প্রশ্নসমূহের যে সব উত্তর ঠিক হয়েছে তার মধ্যে অন্যতম হল বৈরাগ্যবাদ।
  বৈশিষ্ট্য:
      ১. পৃথিবী এবং মানুষের শারীরিক স্বত্বাস্বয়ং মানুষের জন্য একটি শান্তি কেন্দ্রবিশেষ আর মানুষের আত্নাকে দন্ডপ্রাপ্ত কয়েদীর ন্যায় পিঞ্জিরাবদ্ধ করে রাখা হয়েছে।
      ২. ঈন্দ্রিয়ের সকল প্রয়োজন ও বাসনা বন্দী খানার শৃংখলের ন্যায়।
      ৩. মুক্তি লাভের একমাত্র উপায় প্রকৃতিগত বিভিন্ন প্রয়োজনকে কঠোরভাবে অবদমিত করা, স্বাদ আস্বাসন পরিহার করা এবং দেহ মনের কঠোর কৃচ্ছ সাধন।
      ৪. স্রষ্টার অস্তিত্ব ও অন্যান্য মৌলিক ব্যাপারে এর সুস্পষ্ট বক্তব্য নেই কার্যত নিরব।
সর্বেশ্বরবাদ:অবাস্তব আন্দাজ অনুমান ভিত্তিক পর্যবেক্ষন ও অনুশীলনের ফলে তৃতীয় যে মতটির সৃষ্টি হচ্ছে তা হচ্ছে সর্বেশ্বরবাদ।
বৈশিষ্ট্য: ১. বিশ্ব প্রকৃতির আলাদা কোন সত্তা নেই। মূলত একটি সত্তাই সমস্ত বস্তুজগতের মাধ্যমে স্বত:স্ফূর্তভাবে প্রকাশমান।
ইসলাম: মানুষ ও বিশ্ব প্রকৃতি সম্পর্কে মৌলিক প্রশ্নসমূহের যে জওয়াব আল্লাহ প্রেরিত নবীগন দিয়েছেন তা আন্তরিকতা সহকারে পূর্ণরুপে গ্রহন করার নামই ইসলাম।
নির্ভুল পথ লাভের সাধারন নিয়ম:
১. পথ অনুসন্ধান:
   = কোন অপরিচিত স্থানে পরিভ্রমন।
  =
কোন রুপ অভিজ্ঞতা না থাকলে অন্য কারো নিকট হতে জিজ্ঞাসা।
  = পথ নির্দেশ লাভ ও সে স্থানে ভ্রমন।
২. বৈজ্ঞানিক পন্থা: এক্ষেত্রে পূর্ণ অভিজ্ঞতার পূর্ন দাবীদার খোজা।
    =
দাবীদার বিশ্বাসযোগ্য ও নির্ভরযোগ্য কিনা তা যাচাই করা।
    = দাবীদারের নেতৃত্বে পথ চলা।
    = বাস্তব অভিজ্ঞতার দাবী প্রমাণ।
মানুষ ও বিশ্ব সম্পর্কে নবীর মত:
    ১. বিশ্বজাহান সৃষ্টি ও পরিচালনা করেন মহান আল্লাহ।
    ২. মানব সৃষ্টি ও তার অবস্থান।
    ৩.মানুষের পারস্পরিক আচরন ও বস্তুসামগ্রী ব্যবহার নীতি।
  ৪. আল্লাহর বিধান প্রদর্শনের দায়িত্ব রাসূল সা: এর উপর।
    ৫. মানুষের মর্যাদা ও দায়িত্ব।
    ৬. পরকালীন জীবন ও জবাবদিতা।
মানুষের তৎকালীন সাফল্য দুটি বিষয়ের উপর নির্ভরশীল:
     ১. মানুষ নিজের বুদ্ধি, বিবেক, প্রতিভার নির্ভুল প্রয়োগের মাধ্যমে আল্লাহ তায়ালাকে প্রকৃত ও একমাত্র ব্যবস্থাপক ও আইন রচয়িতা এবং তার নিকট হতে প্রাপ্ত শিক্ষা ও বিধানকে যথার্থ আল্লাহর বিধান হিসেবে জানতে পারলো কি না?
     ২. এ নিগূঢ় সত্য জেনে নেওয়ার পর পথ নির্বাচনের স্বাধীনতা থাকা সত্বেও মানুষ নিজের আন্তরিক ইচ্ছা ও আগ্রহ সহকারে আল্লাহ তায়ালার বাস্তব প্রভূত্ব ও শরীয়তী বিধানের কাছে মাথা নত করলো কিনা?
ইসলামী মতবাদ:
     ১. বৈজ্ঞানিক, নির্ভুল ও পরিপূর্ণ জীবন ব্যবস্থা।
     ২. ফিতরাতের বিধান এবং বাস্তব অভিজ্ঞতা উত্তরন।
     ৩. পার্থিব জীবনে এর ফলাফল:
       ক) ব্যক্তিগত জীবনে দায়িত্বশীলতা ও উন্নত নৈতিকতা।
   খ) বৈষম্যহীন ও নিরপরাধ সমাজ ব্যবস্থা।
       গ) ইসলামের সার্বজনীনতা ও সরলতা।
       ঘ) রাষ্ট্রব্যবস্থার বুনিয়াদ মানব প্রভুত্বের উপর নয়, আল্লাহর প্রভুত্বের উপর।
       ঙ) সমাজ ও সংস্কৃতির ক্ষেত্রে আত্নপূজার পরিবর্তে আনুগত্য।
    চ) বাস্তব অভিজ্ঞতা ও আহবান।
=
নবীদের উপস্থাপিত পথে পরিচালনা করতে হবে। সুতরাং নবীদের আনীত পথ তথা ইসলাম সঠিক পথ এবং এটাই একমাত্র অনুসরনীয়।
ইসলামী আন্দোলনের নৈতিক ভিত্তি
লেখকঃ সাইয়েদ আবুল আলা মওদূদী (রা:), অনুবাদ-মাওলানা আব্দুর রহীম।

ইসলামী আন্দোলনঃ
    মানব জীবনের সকল দিক ও বিভাগ হতে গায়রুল্লাহর প্রভুত্ব উৎখাত করে আল্লাহর কর্তৃত্ব ও রাসূল (সা:) ত্রর নেতৃত্ব প্রতিষ্ঠার জন্য যে সর্বাত্বক চেষ্টা ও প্রচেষ্টা তাকে ইসলামী আন্দোলন বলে।
নৈতিকতাঃ নীতি মানার যেটি অনুভূতি সেটি নৈতিকতা। মানবীয় চরিত্রের যে গুন যা তাকে সঠিক পথে চলতে উৎসাহিত করে।
ভিত্তিঃ যার উপর ভিত্তি করে কোন কিছু সংস্থাপিত হয়।
মানব সমাজে অশান্তির মূল কারণ:-
১. বর্তমান সমাজের নেতৃত্ব সনয়
২.এ মূল সমস্যা জনগন উপলদ্ধি করতে পরেনা
৩. অনৈক্য ও ভাঙ্গন
৪. সত্য ও সত্যপ্রিয় মানুষ অনেক, কিন্তু আসল সত্য প্রিয় মানুষের সংখ্যা কম
৫. সত্যপ্রিয় লোক থাকলেও ক্ষমতায় নেই।

নেতৃত্বর গুরুত্ব্বঃ
    ১. নেতা হচ্ছে যে কোন কার্যের প্রকৃত ভূমিকা পালনকারী।
২. নেতাই ভাঙ্গা ও গড়ার মৌলিক পরিকল্পনাকারী।
৩. নেতা তার অধীনস্ত কর্মীদের অনুসরনীয় ব্যক্তি।
৪. নেতা অসৎ হলে পাপ পঙ্কিলতা দূর হয়ে সৎ পথে চলা হয়।
৫. নেতা সৎ হলে খোদাকেন্দ্রিক ব্যবস্থাপনার দরুন পাপ নি:শেষ না হলে সমাজ সহজে বিকশিত হতে পারে না।

নেতার ব্যাপারে খোদার নির্দেশ/ ইসলামের মূল লক্ষ্যঃ
১. সব মানুষ আল্লাহর গোলামী করবে।
২. খোদার প্রদত্ত বিধানই কর্মীদের চলার পথ।
৩. দুনিয়া হতে সকল অশক্তি ও বিপদ দূর করতে হবে।
৩. উপরোক্ত কাজের নিয়ামক নেতার, কর্মী বা জনশক্তির নয়।
৪. ত্র কাজটি পারে ত্রকমাত্র ইসলামী নেতৃত্ব।
৫. ইসলামী নেতৃত্ব প্রতিষ্ঠিত না থাকলে সামগ্রিক প্রতিষ্ঠার বাতিল নেতৃত্ব উৎখাত করে ইসলামী নেতৃত্ব প্রতিষ্ঠা করতে হবে।
৬. সুতরাং ইসলামের মূল লক্ষ্য নেতৃত্বের আমূল পরিবর্তন।

মানবিক বা নৈতিক দিকঃ ২টি
* ১. মৌলিক মানবীয় গুনাবলী/চরিত্রঃ
          ক) ইচ্ছা শক্তি ও সিদ্বান্ত গ্রহন শক্তি
খ) প্রবল বাসনা
গ) উচ্চাশা ও নির্ভীক সাহস
ঘ) সহিষুতা ও দৃঢ়তা
ঙ) তিতিক্ষা ও কৃচচ্রসাধনা
চ) বীরত্ব ও বীর্যবত্তা
ছ) সহনশীলতা ও পরিশ্রমপ্রিয়তা
জ) উদ্দেশ্যের আকর্ষন ও সে জন্য সব কিছুর উৎসর্গ করার প্রবনতা
ঝ) সর্তকতা
ঞ) দূরদৃষ্টি ও অন্তরদৃষ্টি, বোধশক্তি ও বিচার ক্ষমতা
ট) ইচ্ছাবাসনা
ঠ) স্বপ্ন সাধনা ও উত্তেজনার সংযমশক্তি ত্রবং অন্যান্য মানুষকে আকৃষ্ট করা।

২. ইসলামী চরিত্রঃ
ত্রটি মৌলিক মানবীয় চরিত্রের বিশুদ্ধরুপ। তরবারী সাধারন অবস্থায়, মৌলিক মানবীয় চরিত্র + তরবারী মুজাহিদের হাতে + ইসলামী নৈতিক চরিত্র।
নেতৃত্ব বন্টনে খোদার নীতির সারকথাঃ
১. মৌলিক মানবীয় গুনাবলী যার যত বেশী সে নেতৃত্ব পাবে।
২. ইসলামী নৈতিকতার উপস্থিতি মৌলিক মানবীয় গুনাবলী কম হলেও নেতৃত্ব পাবে।
৩. উপরোক্ত দুইটির সমন্বয় হলে নেতৃত্ব অবশ্যম্ভাবী তবে নেতৃত্ব ফেরেশতা দিয়ে যাবে না। ময়দানে দ্বন্দ সংঘাত পেরিয়ে তা অর্জন করতে হবে
৪. মৌলিক মানবীয় চরিত্র +১০০% জড়শক্তি=সাফল্য।
৫. ইসলামী নৈতিক চরিত্র+২৫% জড়শক্তি = সাফল্য।
ইসলামী নৈতিকতার পর্যায়ঃ ৪ টি
১. ঈমানঃ মৌলিক তিনটি (মু,মিন)
ক. আল্লাহর উপর ঈমানঃ অস্তিত্ব, নাম ও গুনাবলী, ক্ষমতা, হুকুম আহকাম।
খ. রাসূলের উপর ঈমানঃ তার নবু্যয়াত ও রিসালাত স্বীকার, তার সমগ্র আদর্শ প্রতিষ্ঠা করার চেষ্টা, সবকিছুর উধের্ব স্থান দেওয়াও ভালো।
গ) আখরাতের উপর ঈমানঃ পুনরুস্থান ও হাশরে বিশ্বাস, সে কেন্দ্রিক জীবন গঠন।
২. ইসলাম (মুসলমান)
ঈমানের বাস্তবরুপ, বৃক্ষ থেকে বীজ নির্ধারণ, আল্লাহর পূর্ণ আনুগত্য ও রাসূল (সা:) এর পূর্ণ অনুসরনই ইসলাম।
৩. তাকওয়া (মুত্তাকী): ত্রর অর্থ ভয় করে বেঁচে থাকা। মনের সে অনুভূতি যা আল্লাহর প্রবল ভীতির সাথে সাথে দায়িত্বানুভূতি, জবাব দিহির যাবতীয় কাজে হালাল-হারাম বাছাই ও অনুভূতি জাগ্রত করবে।

তাকওয়া ৩ প্রকার :যথা-
ক) তাকওয়ায়ে খাচঃ যাবতীয় শিরিক থেকে বেঁচে থেকে আল্লাহর হুকুম পালন করা।
খ) তাকওয়ায়ে আমঃ যাবতীয় শিরিক থেকে নিজেকে রক্ষা করা।
গ) তাকওয়ায়ে আখাচ্ছল খাচঃ শিরিক থেকে বেঁচে থাকা নয় কুফরীর সাথে সমপর্ক স্থাপন।
৪. ইহসান (মুহসীন);
ইসলামী জীবন প্রাসাদের সর্বোচ্চ পর্যায় আল্লাহ, রাসূল ও ইসলামের প্রতি ত্রমন ভালাবাসা যা নিজেকে তাদের জন্য উৎসর্গ করতে শিখায় তাকওয়া-সরকারী কর্মচারীর যথার্থ দায়িত্ব পালন।
ইহসান: শুধু দায়িত্ব পালন নয়, দেশের জন্য কষ্ট, ত্যাগ, কুরবানী স্বীকার, ইসলামের উদ্দেশ্য হাসিলের জন্য মুহসিন প্রয়োজন মারফাতের পথ-ত্র চার পর্যায় অতিক্রম করে তারপর অন্যথায় দুর্ঘটনা ঘটবে।
ইসলামী আন্দালনের নৈতিক ভিত্তির ১০ টি পর্যায়ঃ
নেতৃত্বের গুরুত্ব, সৎ নেতৃত্ব প্রতিষ্ঠা দ্বীন ইসলামের মূল লক্ষ্য, নেতৃত্বর ব্যাপারে খোদার নিয়ম, মানুষের মানবীয় চরিত্রের বিশ্লেষণ,ইসলামী নেতিকতা, নেতৃত্বের ব্যাপারে খোদায়ী নীতির সারকথা, মৌলিক মানবীয় চরিত্র ও ইসলামী নৈতিকতা শক্তির তৎপরতা, ইসলামী নৈতিকতার ৪ টি পর্যায়, ভুল ধারনার অপনোধ
ইসলামী বিপ্লবের পথ
সাইয়েদ আবুল আলা মাওদুদী (র:), অনুবাদ: আব্দুস শহীদ নাসিম

ভূমিকা:
ইসলামী সমাজ প্রতিষ্ঠার বুলি আমরা প্রতিনিয়ত শুনে থাকি। কিন্তু উহার স্বরুপ এবং প্রতিষ্ঠার পন্থা সম্পর্কে আমাদের সঠিক ধারনার অভাব। ইসলামী রাষ্ট্র সম্পর্কে সকল সন্দেহ বিদূরিত করতে ইসলামী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার কল্পনাকে বাস্তবে রুপান্তরিত করতে হলে, ইসলামের স্বকীয় আদর্শে ব্যক্তির আত্নগঠন ও সমাজ সত্তার রুপায়ন করতে হবে। ইসলামী হুকুমাত- কিসতারাহ কায়েম জাতি হ্যায় এর বাংলা সংস্করন হল- ইসলামী বিপ্লবের পথ। ১৯৪০ সালের ১২ই সেপ্টেম্বর আলীগড় বিশ্ববিদ্যালয়ের স্টেচি হলে ইতিহাস ও সংস্কৃতি সংসদের উদ্যোগে অনুষ্ঠিত সভায় মাওলানা মওদূদীর প্রদত্ত বক্তৃতারই প্রকাশিত রুপ এই বই।
মূল বইকে ৬ টি ভাগে ভাগ করা যায়:
১. রাষ্ট্র ব্যবস্থার স্বাভাবিক বিবর্তন।
২. আদর্শিক রাষ্ট্র।
৩. আল্লাহর সার্বভৌমত্ব এবং মানুষের প্রতিনিধিত্ব ভিত্তিক রাষ্ট্র ।
৪. ইসলামী বিপ্লবের পদ্বতি।
৫. অবাস্তব ধারণা-কল্পনা।
৬. ইসলামী আন্দোলনের সঠিক কর্মনীতি

১. রাষ্ট্র ব্যবস্থার স্বাভাবিক বিবর্তন:
    * রাষ্ট্র ব্যবস্থা তো কোন একটি সমাজের মধ্যকার নৈতিক চরিত্র, চিন্তাচেতনা, মন মানসিকতা, সভ্যতা সংস্কৃতি এবং ইতিহাস এতিহ্যগত কার্যকারণের সমন্বিত কর্ম প্রক্রিয়ার ফলশ্রুতিতে সম্পূর্ণ স্বাভাবিক নিয়মে জন্ম লাভ করে।
     *
আর রাষ্ট্রের প্রকৃতি কি হবে ? তাও নির্ভর করে সমাজের সেই পরিবেশ ও দৃষ্টিভংগির উপর , যার চাপের ফলশ্রুতিতে রাষ্ট্র জন্ম লাভ করে ।
     *
আমরা যে বিশেষ রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করতে চাই, সে প্রকৃতির রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার জন্য সে রকম আন্দোলন সৃষ্টি করতে হবে । সে রকম ব্যক্তিগত, দলীয় ও সামাজিক চরিত্র , প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত নেতৃত্ব এবং সামাজিক কার্যক্রম ও পরিবেশ সৃষ্টি করতে হবে ।

২. আদর্শিক রাষ্ট্র:
ইসলামী রাষ্ট্রের সর্বপ্রথম বৈশিষ্ট্য হল ।
ক. এখানে জাতীয়তাবাদের নাম গন্ধও অনুপস্থিত। এটা হলো IDEOLOGICAL STATE’ যার আদর্শ গ্রহন করে নিলে বংশ , গোত্র ও বর্ণ নির্বিশেষে সকলেই সে রাষ্ট্র পরিচালনায় অংশীদার হয়ে যাবে । খৃষ্টবাদ, ফরাসী বিপ্লব, কমিউনিজম ইত্যাদি এ আশা ক্ষীণ ভাবে জাগ্রত করলে ও জাতীয়তাবাদের তীর্যক ভাবধারায় সমুদ্রের অতল তলদেশে ডুবিয়ে দিয়েছে।
খ. এ রাষ্ট্রব্যবস্থা গোটা মানবজাতিকে তার আদর্শ গ্রহন করে অজাতীয়তাবাদী বিশ্বজনীন রাষ্ট্র গঠনের আহ্বান জানায়।
গ. বর্তমান বিশ্বে এমন একটি রাষ্ট্রের ধারণা অপরিচিত। তা কেবল অমুসলিমদের কাছেই নয় বরং মুসলমানরা পর্যন্ত এর অনর্তনিহিত ভাবধারা অনুধাবন করতে অক্ষম।
১. ইসলামী রাষ্ট্রই আদর্শভিত্তিক রাষ্ট্র।
২. সংকীর্ন জাতীয়তাবাদ হতে সম্পূর্ন মুক্ত।
৩. অন্যান্য রাষ্ট্রনীতি হতে সম্পূর্ণ পৃথক।
৪. জনগনের অধিকার সুদৃঢ়ভাবে প্রতিষ্ঠিত করা।
৫. যোগ্যতার বলে যে কেউ শাসক হতে পারে।
৬. আদর্শ হবে ইসলাম।
৭. উন্নয়নের প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে।
৮. সার্বভৌমত্ব হবে আল্লাহর, প্রতিনিধিত্ব হবে জনগনের।



৩. আল্লাহর সার্বভৌমত্ব এবং মানুষের প্রতিনিধিত্ব ভিত্তিক রাষ্ট্র:
* ইসলামী রাষ্ট্রের দ্বিতীয় বৈশিষ্ট হল, তার গোটা অট্টালিকা আল্লাহর সার্বভৌমত্বের উপর প্রতিষ্ঠিত ।
* এই রাষ্ট্রের প্রকৃত স্বরূপ হচ্ছে, এখানে মানুষ আল্লাহর প্রতিনিধি হিসাবে কাজ করে।
* এই খিলাফাত প্রতিষ্ঠার কাজে এমন সব লোকই অংশীদার হবে, যারা এই আইন ও বিধানের প্রতি ঈমান আনবে এবং তা অনুসরণ ও কার্যকর করার জন্য প্রস্তুত থাকবে।
* সামষ্টিক ভাবে আমাদের সকলকে এবং ব্যক্তিগতভাবে আমাদের প্রত্যেককে এর জন্য মহান আল্লাহর কাছে জবাবদিহি করতে হবে।
* ইসলামী রাষ্ট্রের নাগরিক, ভোটার , সেনা প্রধান , রাষ্ট্রদূত, মন্ত্রীবর্গ, মোটকথা নিজেদের সমাজ জীবনের প্রতিটি বিভাগ, পরিচালিকা যন্ত্রের প্রতিটি অংশ সম্পূর্ণ নতুনভাবে নিজস্ব ভিত্তিতে ঢেলে সাজাতে হবে।
* এ রাষ্ট্রের পরিচালকদের অন্তরে আল্লাহর ভয় থাকবে।
* পৃথিবীর ধনভান্ডার হস্তগত হলেও নিখাদ আমানতদার প্রমানিত হবে।
* ক্ষমতা হস্তগত হলে জনগনের কল্যান চিন্তায় যারা বিনিদ্র রজনী কাটাবে।
* জনগণ ও তাদের সুতীব্র দায়িত্বানুভূতিপূর্ণ রক্ষণাবেক্ষণাধীনে নিজেদের জানমাল, ইজ্জত আবরুসহ যাবতীয় ব্যাপারে সম্পুর্ণ নিরাপদ ও নিশ্চিন্ত …………..

৪. ইসলামী বিপ্লবের পদ্ধতি:
ক. ইসলামী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠিত হবার জন্য প্রথমে এমন একটি আন্দোলন প্রয়োজন যে আন্দোলনের মধ্যে ইসলামের প্রাণশক্তির সাথে পূর্ণ সামঞ্জস্যশীল।
খ. এমন একটি শিক্ষা ব্যবস্থা গড়ে তুলতে হবে যা জ্ঞান বিজ্ঞানের প্রতিটি শাখায় এমনসব বিশেষজ্ঞ তৈরী হবে যারা নিজেদের মন মানসিকতা , ধ্যানধারনা ও চিন্তা দর্শনের দিক থেকে হবে পূর্ণ মুসলিম। যাদের ইসলামের মূলনীতির ভিত্তিতে বাস্তবধর্মী এক পরিপূর্ণ জীবন ব্যবস্থার নীল নকশা তৈরী করার থাকবে পূর্ণাংগ যোগ্যতা ।
গ. প্রভাবশালী লোকদের আন্দোলনে সমম্পৃক্ত করা

৫. অবাস্তব ধারণা কল্পনা: কিছু লোকের ধারণা।
ক. মুসলমানরা সংগঠিত হলেই তাদের সকল সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে। মূলত জাতীয়তাবাদী চিন্তাধারা দিয়ে ইসলামী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠিত হয় না।
খ. মুসলমান একটি বংশগত বা ঐতিহাসিক জাতির ধারণা , শুধু সেই জাতিটিরই কেবল উন্নতি সাধন করা এবং একটি জাতীয় রাষ্ট্র ও অর্জিত হতে পারেকিংবা কমপক্ষে দেশ শাসনে ভাল একটা অংশীদারিত্ব লাভ হতে পারে। কিন্তু ইসলামী বিপ্লব বা রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার দিক দিয়ে এটাকে প্রথম পদক্ষেপ ও বলা যেতে পারে না।

৬. ইসলামী আন্দোলনের সঠিক কর্মণীতি:
   ক) এক আল্লাহর একচ্ছত্র ও সার্বভৌমত্বের ভিত্তিতে মানবজীবনের পরিপূর্ণ ইমারত রচনা করার প্রচেষ্টা ও আন্দোলনকে বৈপ্লবিক দৃষ্টিতে বলা হয় ইসলাম।
     খ) মুহাম্মদুর রাসুলুল্লাহ (সা:) এর অনুসৃত পথেই ইসলামী আন্দোলনের কর্মনীতি পরিচালনা করা। 

ইসলামী আন্দোলন: সাফল্যের শর্তাবলী
সাইয়েদ আবুল আলা মাওদুদী, অনুবাদক: আব্দুল মান্নান তালিব
                                


প্রকাশকের কথা:
     ১. এই পৃথিবীর বুকে মানুষের কোন উদ্দেশ্য, আন্দোলন, সংষ্কামূলক কোন পদক্ষেপ সফল হতে হলে সে আন্দোলনের কর্মীদের মধ্যে সে আন্দোলনের বিশেষ গুণগুলো দেখা যায়।
     ২. সমস্যা সঙ্কুল এই দুনিয়ায় ইসলামী সমাজ-প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে অবতীর্ণ হওয়া ছাড়া আখেরাতে আল্লাহর সন্তুষ্টি পাওয়ার উত্তম পথ নেই।
     ৩. এ আন্দোলন তার কর্মীদের কাছে আশা করে অধিক কর্মপ্রেরণা, ত্যাগ আর কুরবাণী। দাবী করে বিশেষ যোগ্যতা ও বৈশিষ্টের।
 ভুমিকা:
*
সমস্যা:
    ১. জাতির মধ্যে ইসলাম প্রতিষ্ঠার জন্য আকাঙ্খিত লোকের অভাব নেই। অভাব হলো আগ্রহ ও উদ্যোগের, তার চেয়ে বেশী অভাব যোগ্যতার।
    ২. জাতি সমগ্র প্রভাবশালী অংশ সমাজে বিকৃতি ও ভাঙ্গণ সৃষ্টিতে মুখর। আর যারা সমাজে বিকৃতি ও ভাঙ্গণের কাজে লিপ্ত নেই তারাও সৃষ্টি বিন্যাসের চিন্তামুক্ত।
    ৩. বর্তমান যুগে সমাজ জীবন পরিগঠন ও ভাঙ্গার বৃহত্তম শক্তি হচ্ছে সরকার।
*
সম্ভাবনা:
   ১. জাতি সামগ্রিকভাবে অসৎ প্রবন নয়।
   ২. বিচক্ষনতার সাথে সুসংঘবদ্ধ প্রচেষ্ঠা চালালে জনমত একদিন সত্যের পথে আসবেই।
   ৩. বিকৃতির কাজে লিপ্ত বাতিলের দুইটি গুরুত্বপূর্ণ শক্তির অভাব। এক- চারিত্রিক শক্তি, দুই- ঐক্যের শক্তি।
শিক্ষনীয়:
   ১. দ্বীন প্রতিষ্ঠার কাজ আল্লাহর কাজ । এ জন্য শর্ত হল ধৈর্য্য, আন্তরিকতা এবং বুদ্ধি বিচক্ষনতা দিয়ে সামনে আগানো।
   ২. আল্লাহর প্রদত্ত নীতির অনুসরন।
   ৩. সাময়িক আবেগ দিয়ে নয় সুস্থ মস্তিষ্কে, সুচিন্তিত সিদ্ধান্তের মাধ্যমে একাজে আত্ননিয়োগ করতে হবে।
বইটির মূল অংশ পাঁচ ভাগে বিভক্ত:
১. ব্যক্তিগত গুণাবলী
        ক. ইসলামের যথার্থ জ্ঞান।
খ. ইসলামের প্রতি অবিচল বিশ্বাস।
গ.চরিত্র ও কর্ম।
ঘ. দ্বীন হচ্ছে জীবনোদ্দেশ্য।
২. দলীয় গুণাবলী।
        ক.ভ্রাতৃত্ব ও ভালোবাসা।
খ.পারষ্পরিক পরামর্শ।
        গ.সংগঠন ও শৃংখলা ।
ঘ.সংষ্কারের উদ্দেশ্যে সমালোচনা।
৩. পূর্ণতাদানকারী গুণাবলী।
        ক. খোদার সাথে সম্পর্ক ও আন্তরিকতা।
খ.আখেরাতের চিন্তা।
গ.চরিত্র মাধুর্য।
ঘ. ধৈর্য্য।
ঙ.প্রজ্ঞা।
চরিত্র ও মাধুর্যের কতিপয় বিষয়াবলী:
১. উদার হ্রদয় ও বিপুল হিম্মত।
২. সৃষ্টির প্রতি সহানুভুতিশীল ও মানবতার দরদী।
৩. ভদ্র ও কোমল স্বভাব সম্পন্ন।
৪. আত্মনির্ভরশীল ও কষ্টসহিষ্ণু।
৫. মিষ্টভাষী ও সদালাপী।
       ৬. তাদের দ্বারা কোন ক্ষতির আশংকা ও কেউ করবে না বরং তাদের থেকে কল্যান কামনা করবে।
৭. নিজেদের প্রাপ্যের চেয়ে কমের উপর সন্তুষ্ট থাকবে এবং অপরকে বেশী দিতে প্রস্তুত থাকবে।
৮. মন্দের জবাব ভাল দিয়ে দেবে।
৯. নিজের দোষ-ত্রুটি স্বীকার করবে এবং অন্যের গুণাবলীর কদর করবে।
১০. অন্যের দুর্বলতার প্রতি নজর না দেয়ার মতো বিরাট হ্রদয়পটের অধিকারী হবে।
১১. অন্যের দোষ-ত্রুটি ও বাড়াবাড়ি মাফ করে দেবে এবং নিজের জন্য কারোর উপর প্রতিশোধ নেবে না।
১২. অন্যের সেবা গ্রহন করে নয় ,অন্যকে সেবা করে আনন্দিত হবে। ১৩. নিজের স্বার্থে নয় , অন্যের ভালোর জন্য কাজ করবে।
১৪. কোন প্রশংসার অপেক্ষা না করে , কোন নিন্দার তোয়াক্কা না করে নিজের দায়িত্ব পালন করবে।
১৫. খোদা ছাড়া আর কারোর পুরষ্কারের প্রতি দৃষ্টি দেবে না।
১৬. তাদেরকে বল প্রয়োগে দমন করা যাবে না।
১৭. ধন-সম্পদের বিনিময়ে ক্রয় করা যাবে না কিন্তু সত্য ও ন্যায়ের সামনে নির্দ্বিধায় ঝুকে পড়বে।
১৮. তাদের ভদ্রতা ও ন্যায়নীতির ব্যাপারে শক্রদের ও আস্থা থাকবে।
ধৈর্য্যের কতিপয় বিষয়াবলী:
      ১. তাড়াহুড়ো না করা , নিজের প্রচেষ্টার ত্বরিত ফল লাভের জন্য অস্থির না হওয়া এবং বিলম্ব দেখে হিম্মত না হারানো।
      ২. তিক্ত স্বভাব, দুর্বল মত ও সংকল্পহীনতার রোগে আক্রান্ত না হওয়া।
       ৩. বাধা বিপত্তির বীরোচিত মোকাবেলা করা।
প্রজ্ঞার কতিপয় বিষয়াবলী:
   ১. গভীর দৃষ্টি।
   ২. চিন্তাশক্তি।
   ৩. বুদ্ধি ও বিবেচনা শক্তির প্রয়োজন।
   ৪. পরিস্থিতি সম্পর্কে ওয়াকিফহাল।
   ৫. বিচার বিবেচনা ও সিদ্ধান্ত গ্রহনের ক্ষমতা রাখে এবং জীবন সমস্যা বুঝার ও সমাধানের যোগ্যতা রাখে।
এসব গুণকেই এক কথায় বলা হয় প্রজ্ঞা।
৪. মৌলিক ও অসৎ গুণাবলী:
       ক. গর্ব ও অহঙ্কার ।
খ. প্রদর্শনেচ্ছা গ. ত্রুটিপূর্ণ নিয়ত।
গর্ব ও অহঙ্কার থেকে বাঁচার উপায়:
১. বন্দেগীর অনুভূতি।
২. আত্মবিচার ।
৩. মহৎ ব্যক্তিদের প্রতি দৃষ্টি।
৪. দলগত প্রচেষ্টা।
প্রদর্শনেচ্ছা থেকে বাঁচার উপায়:
১. ব্যক্তিগত প্রচেষ্টা।
২. সামষ্টিক প্রচেষ্টা।
৫. মানবিক দুর্বলতা
             ক) আত্মপুজা।
খ) আত্মপ্রীতি।
বাঁচার উপায় : তওবা ও এস্তেগফার।
গ) হিংসা বিদ্বেষ । ঘ) কু-ধারণা। ঙ) গীবত। চ) চোগলখোরী।
ছ) কানাকানি ও ফিসফিসানী। জ) মেজাজের ভারসাম্যহীনতা।
ঝ) একগুয়েমী। ঞ) একদেশদর্শীতা। ট) সামষ্টিক ভারসাম্যহীনতা।
ঠ) সংকীর্ণমনতা।
ইসলামী রেনেসাঁ আন্দোলন
সাইয়েদ আবুল আলা মওদূদী (র:)

জীবন সম্পর্কে চারটি মতবাদ:
দুনিয়ায় যতগুলো জীবন বিধান আছে তার প্রত্যেকটি এই চারটি অতি প্রাকৃত মতবাদের যে কোন একটিকে অবশ্যই গ্রহন করেছে।

***নির্ভেজাল জাহেলিয়াত:
বৈশিষ্ট্য:
= মাধ্যম বা পন্থা: বাহ্যেন্দিয়ের উপর ভিত্তি করে উত্তর খোজার প্রচেষ্টা।
=
বিশ্বজাহান সৃষ্টি: আকষ্কিকভাবে সৃষ্টি হয়েছে। স্বয়ংক্রিয় ও অপরিকল্পিতভাবে পরিচালিত এবং আপনা আপনি ধ্বংস হয়ে যাবে।
=
বিশ্ব প্রকৃতির কোন সত্ত্বাধিকারী নেই, থাকলেও মানুষের জীবনের সাথে সম্পর্কহীন।
= দুনিয়া ব্যবহার নীতি: সমগ্র দুনিয়া বিভিন্ন দ্রব্য সামগ্রীর ভান্ডার। নিজের ইচ্ছেমতো মানুষ হস্তগত করবে ও ব্যবহার করবে। কোন জবাবদিহি করতে হবে না।
আইনবিধান ও জবাবদিহিতা:
ক) জীবন যাত্রা নির্বাহের জন্য আইনের কোন উৎস না থাকায় নিজের আইন নিজেরাই তৈরি করে।
খ) কারও নিকট জবাবদিহিতা নেই। যদি করতেই হয় তবে নিজ সমাজনেতা বা রাষ্ট্রশক্তির নিকট জবাবদিহি করতে হবে।
গ) দুনিয়ায় প্রকাশিত ফলাফলের ভিত্তিতে ভুল ও নিভর্ল ক্ষতিকর ও লাভজনক এবং গ্রহনযোগ্য ও অগ্রহনযোগ্য মিমাংশা করা হবে।
ফলাফল:
= মানুষের স্বাধীন ও স্বেচ্ছাচারী জীবন:
ক) মানুষ পুরোপুরি স্বাধীন ও স্বেচ্ছাচারী এবং তার কর্মনীতি সম্পূর্ণ দায়িত্বহীন।
খ) নিজেকে দেহ এবং দৈহিক শক্তির একচ্ছত্র মালিক মনে করে এবং ইচ্ছেমতো এর ব্যবহার করে।
গ) যে বস্তু তার করায়ত্ত্ব ঘটে তার উপর কতর্ত্ব স্থাপন।
নৈতিক মূল্যবোধের অনুপস্থিতি:
  ক) তার হৃদয়মনে নৈতিক অনুভূতি, দায়িত্বাজ্ঞান ও জবাবদিহিতার কোন ভয় থাকে না।
  খ) সাধারন অত্যাচারী, বিশ্বাসঘাতক ও দুনিয়াপরায়ন হয়।
গ) প্রত্যেক মানুষ একজন জাতীয়তাবাদীর ভূমিকা পালন করে।
ঘ) আত্নত্যাগ ও আত্নদানের ভাবধারা এবং একধরনের দায়িত্বপূর্ণ নৈতিক অনুভূতির পরিচয় দেয়া গেলেও মূলত: তা স্বার্থপরতা ও আত্নম্ভরিতার সমপ্রসারিত রুপ।
 নির্ভেজাল জাহেলিয়াতের মূলকথা:
১. বিশ্ব জাহানের ব্যবস্থাবলী একটি আকর্ষিক ঘটনার বাস্তব প্রকাশ।
২. মানুষ এক ধরনের পাশবিক বা জৈবিক সত্তা ঘটনাক্রমে তার উদ্ভব হয়েছে।
পৃথিবী সম্পর্কে ধারনা:
১. এর কোন স্রষ্টা নেই। আর থাকলেও তার সাথে মানব জীবনের সংগে কোন সম্পর্ক নেই।
২. এমনকি স্বয়ংস্ফূর্তভাবে ইচ্ছা তৈরি হয়েছে। স্বয়ংস্ফূর্তভাবে পরিচালিত হচ্ছে এবং স্বয়ংস্ফূর্তভাবে একদিন হঠাৎ কোন কার্যকারিতা ছাড়াই ধ্বংস হবে।
         
***শের্ক মিশ্রিত জাহেলিয়াত :
বিশ্ব জাহানের এ ব্যবস্থা কোন ঘটনাক্রমিক প্রকাশ নয় এবং খোদাহীন অস্তিত্বের অধিকারী ও নয়। এর একটি খোদা নয় বরং বহু খোদা বর্তমান। তারা একেকজন সৃষ্টির একেকটি বিষয় দেখাশুনা করে।
বৈশিষ্ট্য:
=
বৈজ্ঞানিক প্রমানভিত্তিক নয়। নিছক কল্পনা নির্ভর।
=
উৎস:- ভয় ও ক্ষমতা থেকে এর সৃষ্টি। অতিপ্রাকৃত বা অলৌকিক কোন কিছু দেখলেই তাতে কল্পিত ক্ষমতা রোপ ও পূজা আরম্ব করে।
=
ফেরেশতা, জ্বীন, পাহাড়, নক্ষত্র, আগুন, নদী ইত্যাদিকে দেবতায় পরিনত করেছে।
=
আল্লাহর ধারনা এমনভাবে প্রতিষ্টিত করেছে যেন আল্লাহ একজন বাদশাহ এবং অন্যান্য খোদারা তার উজির ও নজির। দরবারী, মোসাহেব ও কর্মচারী পর্যায়ের মানুষ সরাসরি সেই নামদার বাদশাহ পর্যন্ত পৌছাতে অক্ষম। তাই অধীনস্ত খোদাদের সাথে পুঁজের মাধ্যমে সরাসরি সম্পর্ক স্থাপন করে।
          ফলাফল:
=
অতি প্রাকৃতিক শক্তিতে বিশ্বাসের কারনে অবাস্তব আশ্রয় ও অবাস্তব ভয়ে পুঁজের মাধ্যমে বিপুল পরিমান শক্তি অর্থহীনভাবে অপচয় করে।
=
অঙ্গ লোকেরা মুশরিকদের খোদাকে পরিত্যাগ করে যাদের গোটা জীবন কেটেছে শিরক এর বিরুদ্ধে যেমন: ওলি, শহীদ, দরবেশ, গওস, কুতুব, ওলামা, পীর আল্লাহর এ সব নেক বান্দাদের খোদার আসনে প্রতিষ্টিত করেছে।
=
মুশরিদের ন্যায় পুজা অর্চনার পরিবর্তে ফাতেহা খানি জেয়ারত, নজর-নিয়াজ, উরুস, চাদর-চড়ানো, তাজিয়া করা ইত্যাদি নিয়ে নতুন শরীয়ত তৈরি করা হয়েছে।
=
কোন তত্বগত দলিল প্রমান ছাড়া ঐ সব নেক লোকদের জম্ম-মৃতু্য, আভির্বাব-তিরোভাব, কাশফ-কেরামত, ক্ষমতা-কতর্ৃত্ব এবং আল্লাহর দরবারে তাদের নৈকট্যের ধরন সম্পর্কে পৌত্তালিক মুশরিকদের পৌরানিকবাদের সঙ্গে সামঞ্জস্যসীল একটি পৌরানিকবাদ তৈরি করা হয়েছে।
=
ওসিলা রুহানী মদদ ফয়েজ ইত্যাদি শব্দগুলোর সুদৃশ্য আচরনের আড়ালে আল্লাহ ও বান্দাহদের মধ্যকার সম্পর্ককে ঐ সব নেক লোকদের সাথে জুড়ে দেয়া হয়েছে।
=
মুশরিকদের সাথে ঐসব মুসলমানদের পার্থক্য এই যে, তারা আল্লাহর এসব নিচের স্তরের কর্মকর্তাদের প্রকাশ্যে আর এসব মুসলমানেরা গওস, কুতুব, আবদাল ও আল্লাহ প্রভৃতি শব্দের আবরনে এদেরকে ঢেকে রাখে।
        
 নির্ভেজাল ও শিরক মিশ্রিত জাহেলিয়াতের পার্থক্য:
১. শিরকে পূজা, মানত, অর্ঘ্য ইত্যাদি অনুষ্ঠানের আধিক্য কিন্তু নির্ভেজাল জাহেলিয়াতে এসব নেই।
২. নৈতিক চরিত্র ও কর্মের মধ্যে কোন পার্থক্য নেই।
৩. শিক্ষা, শিল্প, দর্শন, সাহিত্য, রাজনীতি, অর্থনীতি, নির্ভেজাল ইত্যাদির জন্য কোন মূলনীতি শিরকে নেই। তাই নির্ভেজাল জাহেলিয়াত থেকে তা গ্রহন করে।
৪. মুশরিকরা কল্পনাবিলাসী। নির্ভেজাল বাস্তবধর্মী।
৫. শিরকের রাজ্যে রাজা ও ধর্মীয় নেতাগন খোদার আসনে প্রতিষ্ঠিত। বংশ এবং শ্রেনীর প্রাধান্যের উপর এ মতবাদ প্রতিষ্ঠিত। নির্ভেজাল রাজত্বে পরিবার পূজা, বংশ পূজা, একনায়কতন্ত্র, সামাজ্যবাদ, পুঁজিবাদ, শ্রেণী সংগ্রামের রুপ ধারন করে।
       
*** বৈরাগ্যবাদী জাহেলিয়াত:
বাস্তব পর্যবেক্ষনের সাথে আন্দাজ অনুমানের সংমিশ্রনে মানব জীবনের মৌলিক প্রশ্নসমূহের উত্তর ঠিক করাকে বৈরাগ্যবাদ বলে অভিহিত করা হয়।
বৈশিষ্ট্য:
=
পৃথিবী ও মানুষের শারীরিক সত্বা সয়ং মানুষের জন্য একটি শাস্তিকেন্দ্র। মানুষের আত্নাকে দন্ডপ্রাপ্ত কয়েদীর ন্যায় পিঞ্জিরাবদ্ধ করে রাখা হয়।
=
ইন্দ্রিয়ের সকল প্রয়োজন ও বাসনা বন্দীখানার শৃঙ্খলের ন্যায়।
=
নাযাত লাভের উপায় হচ্ছে প্রকৃতিগত বিভিন্ন প্রয়োজনকে কঠোরভাবে অবদমিত করা।
=
সকল প্রকার আনন্দ-উচ্ছাস, স্বাধ-আস্বাধন পরিহার এবং দেহ মনের কঠোর বৃদ্ধি সাধণ।
=
স্রষ্টার অস্তিত্ব ও মৌলিক ব্যাপারে সুস্পষ্ট বক্তব্য নেই।
ফলাফল:
=
সৎ ও ধর্মভীরু লোকদেরকে দুনিয়ার ঝামেলা মুক্ত করে নির্ভেজাল করে তোলে, মানে দুষ্ট ও অসৎ প্রকৃতির লোকেরা কর্তৃত্ব ও ক্ষমতা দখল করে ফিৎনা, ফাসাদ সৃষ্টি করে।
=
জনগনের মধ্যে অবাঞ্জিত ধৈর্য্য, সহিঞ্চতা ও নৈরাশ্যবাদী দৃষ্টি ভঙ্গির সৃষ্টি হয়। এতে করে রাজা, বাদশাহ, আমীর, ওমরাহ ও ধর্মীয় কর্তত্বশালী শ্রেনী জনগনের উপর প্রভাব বিস্তারে সক্ষম হয়।
=
দুনিয়াকে পরিক্ষাস্থল, কর্মস্থল, পরকালের কৃষিক্ষেত্রের পরিবর্তে দারুল আযাব মায়াজাল হিসেবে উপস্থাপন করে। ফলে মানুষ পৃতিবীতে নিজের প্রতিনিধিত্বের দায়িত্ব ভুলে যায় এবং দুনিয়া থেকে নিজের গাঁ বাঁচিয়ে চলতে চায়।
=
উম্মতের একটি অংশকে মোকাবেলা, মোশাহাদা, কাশফ-বিরাজাত, চিল্লাদান, ওজিফাপাঠ, আমালিয়াত ব্যাখ্যার নফল আদায়ের ব্যাপারে ফরযের চেয়ে বেশি মনোযোগী হয়ে পড়ে।
=
দ্বীনের নির্দেশের ব্যাপারে অযথা বাড়াবাড়ি ছোটখাট জিনিস খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে পরিমাপ করা। খুঁটিনাটি বিষয়ে অস্বাভাবিক মনোযোগ ও যত্ন নেয়ার রোগ জম্ম নিয়েছে।

***ইসলাম
মানুষ ও বিশ্ব প্রকৃতি সম্পর্কে মৌলিক প্রশ্নসমূহের যে জওয়াব আল্লাহ প্রেরিত নবীগন দিয়েছেন, তা আন্তরিকতা সহকারে পূর্নরুপে গ্রহন করার নামই ইসলাম।

মানুষ ও বিশ্বজগৎ সম্পর্কে নবীদের মতে:
১. এ মহাবিশ্ব এর প্রতিটি সৃষ্টি সব কিছুর স্রষ্ট্রা আল্লাহ। তিনিই এর একমাত্র শাসক ও পরিচালক। সবকিছুই তারই ক্ষমতার অধীন।
২. মানুষ সম্পর্কিত: মানুষ বিশ্ব প্রকৃতির একটি অংশ এবং জম্মগত প্রজা। এটি মানুষের ইচ্ছাধীন নয়। মানুষ ইচ্ছে করলেও এর বাহিরে যেতে পারে না।
৩. মানুষের দায়িত্ব: সৃষ্টিকর্তার আনুগত্য করা, এর পক্ষ থেকে আগত প্রত্যেক নির্দেশ পালন করা।
৪. মানুষকে পরিক্ষা করার জন্য জ্ঞান, বুদ্ধি, বিবেক এবং স্বাধীনতা দেয়া হয়েছে।
৫. আল্লাহর দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করলে তার জন্যে রয়েছে পুরস্কার এবং না করলে রয়েছে শাস্তি।
৬. তাৎক্ষনিকভাবে যদি শাস্তি নাও হয় তবে আখেরাতে চূড়ান্ত শাস্তি হবে।

*** মুজাদ্দিদ কাকে বলে?
= যারা ইসলামকে জাহেলিয়াতের দূষিত পানি থেকে ছেঁকে পৃথক করে নিয়ে কোন না পর্যায়ে এবং তাকে তার সত্যিকার নির্ভেজাল আকৃতিতে পুনর্বার অগ্রসর করার প্রচেষ্টা চালায় তাকে মুজাদ্দিদ বলে।
=
যে ব্যক্তি দ্বীনকে নতুন করে সজ্জীবিত সতেজ করেন তাকে মুজাদ্দিদ বলে।

 মুজাদ্দিদের বৈশিষ্ট্য: ১০ টি
১. স্বচ্ছ চিন্তার অধিকারী।
২. সত্য উপলদ্ধির মত গভীর দৃষ্টি সম্পূন্ন।
৩. সব রকমের বক্রতাহীনতা, দোষমুক্ত, সরল বুদ্ধিবৃত্তিতে তার মনোজগৎ পরিপূর্ণ।
৪. নিজের ভারসাম্য রক্ষা করার বিশেষ যোগ্যতা সম্পূন্ন।
৫. নিজের বিকৃত গতিধারার সাথে যুদ্ধ করার ক্ষমতা ও সাহস।
৬. নেতৃত্বের জম্মগত যোগ্যতা।
৭. ইজতিহাদের স্বাভাবিক যোগ্যতা।
৮. ইসলাম সম্পর্কে দ্বীধামুক্ত পরিপূর্ণ জ্ঞানের অধিকারী।
৯. দৃষ্টিভঙ্গি ও বুদ্ধিজ্ঞানের দিক দিয়ে পরিপূর্ণ মুসলমান।
১০. ইসলাম ও জাহেলিয়াতের মধ্যে পার্থক্য করার যোগ্যতা।

 মুজাদ্দিদের কাজ: ৯ টি
১. নিজের পরিবেশের নির্ভুল চিত্রাংকন।
২. সংস্কারের পরিকল্পনা প্রনয়ণ।
৩. নিজের সীমা পরিসীমা নির্ধারন।
৪. চিন্তারাজ্যে বিপ্লব সৃষ্টির প্রচেষ্টা।
৫. সক্রিয় সংস্কার প্রচেষ্টা।
৬. দ্বীনের বিভিন্ন ক্ষেত্রে ইজতিহাদ করার প্রচেষ্টা।
৭.প্রতিরক্ষামূলক প্রচেষ্টা।
৮. ইসলামী ব্যবস্থার পুনরুজ্জীবন।
৯. বিশ্বজনিন বিপ্লব সৃষ্টি।
একজন মুজাদ্দিদের জন্য প্রথম তিনটি কাজ অপরিহার্য্য।
অবশিষ্ট ৬ টির মধ্যে যে কোন কার্য সম্পাদন করলে তাকে মুজাদ্দিদ বলা যাবে।

***মুজাদ্দিদ ও নবীর মধ্যে পার্থক্য:
নবী
১. খোদার নির্দেশে তার পথে নিযুক্ত হন এবং নিজের নিয়োগ সম্পর্কে অবগত।
২. ওহী নাযিল হয়।
৩. নবুয়্যাতের দাবীর মাধ্যমে তিনি কাজের সূচনা করে সকলকে নিজের দিকে আহবান করে।
৪. মুমীন হওয়ার জন্য নবীর দাওয়াত গ্রহন করা অপরিহার্য্য।
মুজদ্দিদ
১. প্রাকৃতিক আইনের মাধ্যমে নিযুক্ত হন এবং নিজের নিয়োগ সম্পর্কে অবগত নন।
২. ওহী নাযিল হয় না।
৩. কোন দাবীর মাধ্যমে কাজ করেন না। কিন্তু তার সৎ ও উন্নত চরিত্রের কারনে মানুষ একত্রিত হয়।
৪. মুজাদ্দিদের উপর ঈমান আনা অপরিহার্য্য নয়।
কামেল ও আদর্শ মুজাদ্দিদ:
১. এখনো কোন কামেল মুজাদ্দিদের আবির্ভাব ঘটেনি।
২. হযরত ওমর ইবনে আবদুল আযীয (র:) এর মর্যাদায় প্রতিষ্ঠিত হতে যাচ্ছিলেন কিন্তু সফলকাম হননি।
৩. একমাত্র একজনই কামেল মুজাদ্দিদ হতে পারেন যার নাম হবে ঈমামুল মেহেদী।

কিয়ামতের আগে ৫ টি পর্যায় অতিক্রম হবে
১. নবুয়্যাতের যুগ।
২. খেলাফতের যুগ।
৩. রাজতন্ত্রের যুগ।
৪. জুলুম তন্ত্রের যুগ(বর্তমান)।
৫. নবুয়্যাত পদ্ধতিতে খেলাফত প্রতিষ্ঠা।
নবীর কাজ:
১. সাধারন মানুষের মধ্যে চিন্তার বিপ্লব সৃষ্টি করা।
২. এই শিক্ষায় প্রভাবিত লোকদের নিয়ে একটি শক্তিশালী দল গঠন করে জাহেলিয়াতের হাত থেকে কতৃত্ব ছিনিয়ে নেয়ার প্রচেষ্টা।
মুজাদ্দিদের প্রয়োজনীয়তা:
১. এই তিন ধরনের জাহেলিয়াতের ভিড় থেকে ইসলামকে উদ্ধার করে পুনরায় সবল ও সতেজ করার জন্য।
২. বিপথে পরিচালিত জীবন ধারা পরিবর্তন করে পুনর্বার ইসলামের পথে অগ্রসর করা।
কতিপয় মুজাদ্দিদ:
১. উমর ইবনে আবদুল আযীয (হিজরী: ৬১-১০১)।
২. ইমাম আবু হানিফা (র:) (হিজরী: ৮০-১৫০)
৩. ইমাম মালিক (র:) (হিজরী: ৯৫-১৭৯)।
৪. ইমাম শাফেয়ী (র:) (হিজরী: ১৫০-২৯০)।
৫. ইমাম আহম্মদ ইবনে হাম্বল (র:) (হিজরী: ১৬৪-২৪১)।
৬. ইমাম গাজ্জালী (র:) (হিজরী: ৪৫০-৫০৫)।
৭. ইমাম তাইমিয়া (র:) (হিজরী: ৬৬১-৭২৮)।
৮. শায়খ আহম্মদ সরহিন্দী (হিজরী: ৯৭৫-১০৩৪)।
৯. সাইয়েদ আহমদ বেরেলবী (হিজরী: ১২০১-১২৪৬)।
১০. শাহ ওয়ালী উল্লাহ দেহলবী (হিজরী: ১১১৪-১১৭৬)।
১১. শাহ ইসমাঈল শহীদ (র:) (হিজরী: ১১৯৩-১২৪৬)।

Bmjvgx msMVb
 G. †K. Gg. bvwRi Avn‡g`


f~wgKv :- GB eBwU‡Z 23wU wel‡q Av‡jvPbv Kiv n‡q‡Q|
Bmjvgx msMVb :- msMVb k‡ãi mvavib A_© msNe× Kib| Gi we‡kl A_© `je× ev msNe× Rxeb| BKvg‡Z Øx‡bi Kv‡R AvÄvg †`q †h msMVb Zv‡KB ejv nq Bmjvgx msMVb|
Bmjvgx msMV‡bi ¸i“Z¡ :-
  • gygxb‡`i msNe× Rxeb hvcb Ki‡Z n‡e|
  • GKKfv‡e Rxeb hvc‡bi AwaKvi KviI ‡bB|
  • Bmjvgx msMVb †_‡K wew”Qbœ nIqv Rv‡nwjqv‡Z cÖZ¨veZ©b kvgxj|
  • msNe× Rxeb hvcb RvbœvZ cÖvwßi Ab¨Zg c~e©kZ©|
  • msMVb bv _vK‡j Bmjvg †MŠi‡e wU‡K _vK‡Z cv‡i bv|
msMV‡bi Dcv`vb 3wU :-
1. †bZ…Z¡
2. Kg©xevwnbx
3. msMVb cwiPvjbv
Bmjvgx msMV‡bi g~j Dcv`vb wZbwU :-
1. Bmjvgx †bZ…Z¡
2. Bmjvgx Kg©xevwnbx
3. Bmjvgx msMVb cwiPvjbv c×wZ
Bmjvgx †bZ…Z¡ :- †hB †bZ„Z¡ Bmjv‡gi Av‡jv‡K AvZœMVb K‡i ïaygvÎ Øxb cÖwZôvi Rb¨ AvZœ wb‡qvM I Kg©xevwnbx cwiPvjbv K‡i †mB †bZ…Z¡B Bmjvgx †bZ…Z¡|
Bmjvgx Kg©xevwnbx :- †hB Kg©xevwnbx `ywbqvex †Kvb ¯^v‡_© RwoZ bv n‡q †Kej Avj­vni Øxb cÖwZôvi Rb¨ Bmjvgx †bZ…‡Z¡i Aaxb mgq kw³ I A‡_©i Kzievbx w`‡Z _v‡Kb ZvB Bmjvgx Kg©xevwnbx|
  • Bmjvgx msMVb I BKvg‡Z Øxb :-
  • Bmjvgx msMV‡bi †bZ…Z¡ KvVv‡gv :-
Ø gymjgvb‡`i Avgxi n‡eb GKRb
Ø gymjgvbMY Zv‡`i ga¨ †_‡K GKRb‡K wbe©vwPZ Ki‡eb| Zv‡`i ¯^vaxb g‡Zi wfwˇZ|
o       Bmjvgx msMV‡bi j¶¨:- Avj­vn cÖ`Ë Rxeb weavb ivm~‡ji cš’vq gvbe mgv‡R Kv‡qg K‡i Avj­vni m‡š—vl AR©b|
o       Bmjvgx msMV‡bi †bZ…Z¡ wbe©vPb :-
Ø Áv‡bi †¶‡Î †kªôZ¡
Ø DbœZ Avgj
Ø mvnwmKZv
Ø mgvbyewZ©Zv
Ø mvsMVwbK cÖÁv
Ø ‡cÖiYv m„wói †hvM¨Zv
Ø myfvlb
Ø wb_cÎ msi¶‡bi cvi`wk©Zv
Ø wnmve msi¶‡bi cvi`wk©Zv
Bmjvgx †bZ…‡Z¡i cÖavb f~wgKv :-
Ø ZvhwKqv
Ø DLyqvZ m„wó
Ø Z¨v‡Mi Aby‡cÖiYv m„wó
Ø Kg©x‡`i gv‡S Bbmvd m„wó
Ø wec` gywme‡Z ˆah© Aej¤^‡bi Zvjxg
Ø Avj­vni m‡š—vl AR©b‡KB mKj ZrciZvi †K›`ªwe›`y i“‡c Dc¯’vcb
Ø Bmjvgx †bZ…‡Z¡i Revew`nx
Ø Bmjvgx msMV‡b AvbyMZ¨
Ø Bmjvgx msMV‡b c`‡jvfxi ¯’vb
Ø Bmjvgx msMV‡b civgk©
Ø Bmjvgx msMV‡b wm×vš— MÖnY
Ø Bmjvgx msMV‡b Gn‡ZQve|
Bmjvgx msMV‡b Kg©x cwiPvjbv :-
1. Av`‡k©i Av‡jv‡K gb gvbwmKZv MVb
2. Bmjvgx Av‡›`vjb I msMVb m¤ú‡K© my¯úó aviYv
3. Bmjvgx eywbqv`x wb‡`©k¸wj wb‡Ri Rxe‡b ev¯—evq‡bi Rb¨ DØy×KiY
4. gg© Dcjäx K‡i wbqwgZ Avj †KviAvb I Avj nvw`m Aa¨vq‡b DØy×KiY
5. Rvgvqv‡Zi mv‡_ mvjvZ Av`v‡q Drmvn †hvMvb
6. AvZœmgv‡jvPbvq DØy×KiY
7. `vIqvZx Kv‡R DØy×KiY
8. `vIqvZx Kv‡R mn‡hvMxZv `vb
9. `vIqvZx Kv‡Ri wi‡cvU© MÖnY
10. BbdvK wd mvwewjj­vni Rb¨ DØy×KiY
11. myk„sLj Rxeb hvc‡b DØy× KiY
12. mgq m‡PZbZv m„wó
13. cwi”Qbœ Rxeb hvc‡bi Rb DØy× KiY
14. Kv‡Ri cwiKíbv m¤ú‡K© my¯úó aviYv `vb
15. mywbw`©ó `vwqZ¡ Ac©b
16. `vwqZ¡ cvj‡b DØy× KiY
17. Kv‡R Z`viK
18. Kv‡Ri wi‡cvU© MÖnY
19. wi‡cvU© ch©v‡jvPbv
20. mgvR Kg©xi“‡c f~wgKv cvj‡b DØy× KiY
21. e¨vcK cwiwPwZ AR©‡b DØy× KiY
22. ¯^-PvwjZ Kg©x‡`i AvZœMV‡b DØy× KiY
23. bZzb Kg©x MV‡bi Rb¨ Kg©x‡K DØy× KiY
24. msMV‡bi e³e¨ h_vwkNÖ †hvMv‡hvM Kiv
25. civgk© kªeY
26. AMÖmi Kg©x‡K mvsMVwbK cÖwk¶Y `vb
  • Bmjvgx msMV‡bi Kg©x‡`i cix¶v
  • Bmjvgx msMV‡b evqZzj gvj
  • Bmjvgx msMV‡bi Kg©x‡`i AvZœMVb
1. Avj­vni w`‡K Avnevb
2. GKvMÖZv mnKv‡i mvjvZ Av`vq
3. Avj-‡KviAvb Aa¨vqb
4. Avj-nvw`m Aa¨vqb
5. mnvqK mvwnZ¨ Aa¨qb
6. ivwÎ RvMiY
7. Avj­vni c‡_ A_© `vb
8. mKj Kv‡R Avj­vn‡K ¯§iY
9. ivm~‡ji cÖwZ `yi“` cov
10. AvZœmgv‡jvPbv
11. ‡gŠwjK gvbexq ¸b AR©b
12. cvi¯úwiK m¤úK© webóKvix KvR eR©b
v Akvjxb I A‡kvfb K_vevZ©v
v MxeZ
v Av›`vR Abygvb
v wnsmv
v ivM
v AnsKvi
Ø Bmjvgx msMV‡bi Kg©x MVb :-
v mvnPh© `vb
· Aš—Ø›` wbimb
· gvbwmK `„pZv AR©‡b mn‡hvMxZv `vb
v mvsMVwbK cwi‡ek Ac©b
v ‡QvULvU `vwqZ¡ Ac©b
v A_©`v‡b DØy× KiY
v cÖv_wgK cÖwk¶Y `vb
v Avnevb Ávc‡bi `vwqZ¡ Ac©b
v Kv‡Ri wi‡cvU© MÖnY
Ø Bmjvgx msMV‡b Kg©xi gvb Dbœqb
v mvßvwnK mfv
v msw¶ß cÖwk¶Y wkwei
v `xN© cÖwk¶Y wkwei
v e³…Zv Abykxjb Pµ
v e¨w³MZ Avjvc, wRÁvmv I civgk© `vb
Ø Bmjvgx msMV‡b msnwZ
v Bmjvgx Av‡›`vj‡bi cÖK…Z j¶ m¤ú‡K© A¯úóZv
v Bmjvgx msMV‡bi ˆewkó¨ ¸wj m¤ú‡K© A›`bv½ aviYv
v Bmjvgx Av‡›`vj‡bi Kg©c×wZ m¤ú‡K© mskq
v wec` gywmeZ m¤ú‡K© mwVK `„wófw½i Afve
v AMÖvwaKvi wba©vi‡b A¶gZv
v gvbwmK fvimvg¨nxbZv
Ø Z¡iv cÖeYZv
Ø AwZ Avkv
Ø Pig cš’vi cÖwZ †SvK
Ø AnsKvi
Ø Awfgvb
v gy‡Lvk cov `ykg‡bi f~wgKv
Ø Bmjvgx msMV‡bi .......... ivm~j (mv:) KZ…K cwiPvwjZ msMV‡bi µgweKvk I cÖwZôv jv‡fi PviwU ch©vq -
1. ...... i‡ei Kiv
2. kw³ AR©b Kiv
3. ‡gvUv ZvRv nIqv 4. Kv‡Ûi Dci `„pfv‡e `vwp‡q hvIqv|
 যায় না
Bmjvgx Av‡›`vj‡bi Kg©x‡`i cvi¯úwiK m¤úK© -Lyi&ig Rvn& gyiv`

‡jL‡Ki cwiwPwZ t
v bvg t BwÄwbqvi Lyi&ig Rvn& gyiv`
v wcZvi bvg t gÄyi Avjx gyiv`
v gvZvi bvg t †eMg AvbZzj nvB
v 1932 mv‡ji fvi‡Zi ga¨cÖ‡`‡ki ivRavbx f~cv‡j
v MED BwÄwbqvwis K‡jR, KivPx †_‡K MÖvRy‡qkb
v hy³iv‡óªi wf‡bUv BDwbfvwm©wU †_‡K wmwf‡j ‡cv÷ MÖvRy‡qkb
v Bmjvgx Rwgq‡Z Zvjvev, cvwK¯—v‡bi †K›`ªxq mfvcwZ wQ‡jb
v 1957 mv‡j ACE (Associate Council Engineer) Gi GgwW wn‡m‡e evsjv‡`‡k Av‡mb
v 1960-70 ch©š— wZwb XvKv gnvbMix Rvgvqv‡Zi Avgxi wn‡m‡e `vwqZ¡ cvjb K‡ib
v 1970 mv‡j jÛ‡bi `vIqvZzj Bmjvg Uªv‡÷ †hvM`vb K‡ib
v Kvev kix‡di m¤cÖmviY Kv‡R wZwb AvZ¥wb‡qvM K‡ib Ges Zvi bv‡g Kvev kix‡d ev‡e Lyiig gyiv` bv‡g GKwU `iRv Av‡Q
v 1996 mv‡j g„Zz¨i c~e© ch©š— wZwb Rvgvqv‡Z Bmjvgx cvwK¯—v‡bi bv‡q‡e Avgx‡ii `vwqZ¡ cvjb K‡ib|
f~wgKv t
l fªvZ…Z¡ Bmjv‡gi f~lY
l Av‡›`vj‡bi Rb¨ Avek¨Kxq (AvDm I LvRivR)
l †KviAv‡bi AvqvZ¸wj‡Z eûeP‡bi e¨envi Kiv n‡q‡Q

* cÖK…Zc‡¶ Av‡jvP¨ welqwUi wZbwU w`K i‡q‡Q t
l GK mvgvwRK I mvgwMÖK Rxebaviv M‡o †Zvjv Ges G‡K w¯’wZkxj ivLvi R‡b¨ Bmjvg e¨w³ Pwi‡Î †Kvb †Kvb †gŠwjK ˆewk‡ó¨i cÖKvk †`L‡Z Pvq|
l wK wK e¯‘ G wfw˸‡jv‡K aŸsm I `ye©j K‡i †`q, hv‡Z K‡i †m¸‡jv †_‡K †eu‡P _vKv hvq|
l wK wK ¸Yvejx G wfw˸‡jv‡K gReyZ Ges DbœZ K‡i †Zv‡j, hv‡Z K‡i †m¸‡jv‡K MÖnY Kiv †h‡Z cv‡i|

welqe¯‘ t
1. cvi¯úwiK m¤ú‡K© wfwË t Zvi ¸i“Z¡ I cÖ‡qvRbxqZv
2. Pwi‡Îi cÖ‡qvRbxqZv I Zvi †gŠwjK ‰ewkó¨
3. m¤ú‡K©i weK…wZ †_‡K i¶v Kivi Dcvq
4. m¤ú‡K©i `„pZi Kivi cš’v

1. cvi¯úwiK m¤ú‡K© wfwË t Zvi ¸i“Z¡ I cÖ‡qvRbxqZv
Ø m¤ú‡K©i wfwË I gh©v`v
Ø åvZ…Z¡ Cgv‡bi Awbevh© `vex
Ø wek¦e¨vcx Bmjvgx wec­‡ei Rb¨ åvZ…Z¡ Acwinvh©
Ø åvZ…‡Z¡i `vex t Zvi ¸iZ¡ I djvdj
Ø AvwLiv‡Z åvZ…‡Z¡i mydj
      Ø cvi¯úwiK m¤ú‡K©i ¸i“Z¡
2. Pwi‡Îi cÖ‡qvRbxqZv I Zvi †gŠwjK ‰ewkó¨
Ø Kj¨vY Kvgbv
Ø AvZ¥Z¨vM
Ø Av`j (mywePvi)
Ø Bnmvb (m`vPiY)
Ø ingZ
Ø gvR©bv
Ø wbf©iZv
Ø g~‡j¨vcjwä
3. m¤ú‡K©i weK…wZ †_‡K i¶v Kivi Dcvq (‡h mKj Dcv`vb m¤úK©‡K webó K‡i)
Ø AwaKv‡i n¯—‡¶c
Ø †`n I cÖv‡Yi wbivcËv
Ø KUz fvlY I MvjvMvj
Ø MxeZ
Ø †PvMjLyix
Ø kiwg›`v Kiv
Ø wQ`ªv‡š^lY
Ø Dcnvm Kiv
Ø Zz”QÁvb Kiv
Ø wbK…ó Abygvb
Ø Acev`
Ø ¶wZmvab
Ø g‡bvKó
Ø †auvKv †`qv
Ø wnsmv
4. m¤ú‡K©i `„pZi Kivi cš’v
Ø gvb B¾‡Zi wbivcËv
Ø `ytL K‡ó AskMÖnY
Ø mgv‡jvPbv I bwQnZ
Ø gyjvKvZ
Ø i“Mœ fvB‡qi cwiPh©v
Ø Av‡e‡Mi ewntcÖKvk
Ø cÖxwZ I †Lvk‡gRv‡Ri mv‡_ gyjvKvZ
Ø mvjvg
Ø gyQvdvnv
Ø DrK„ó bv‡g WvKv
Ø e¨w³MZ e¨vcv‡i DrmyK¨
Ø nvw`qv
Ø †kvKi †MvRvix
Ø GK‡Î e‡m Avnvi
Ø †`vqv
Ø my›`ifv‡e Reve †`qv
Ø Av‡cvl idv Ges Awf‡hvM LÛb
Ø †Lv`vi Kv‡Q ZvIwdK Kvgbv


কোন মন্তব্য নেই: